দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: সত্যি কি ধ্যানচাঁদকে হিটলার ব্যক্তিগতভাবে ডেকে সেনাবাহিনীতে উচ্চপদ দিয়ে রেখে দিতে চেয়েছিলেন জার্মানিতে! ধ্যানচাঁদের আত্মজীবনী ‘গোল’-এ ১৯৩৬-এর সেই বার্লিন অলিম্পিকের নানান ঘটনার বয়ান বিস্তারিত ভাবে থাকলেও এবিষয়ে একটা শব্দও নেই।
অথচ তাঁর পুত্র ১৯৭৫-এর ভারতের একমাত্র হকি বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য অশোক কুমারের স্মৃতিচারণায় বারবার উঠে আসে সেই কথা। এমন কত যে গল্পের উল্লেখ করা যায়। সেই তাঁর হকি স্টিকে আঠা লাগানো আছে কিনা তার পরীক্ষা থেকে শুরু করে একটি ম্যাচে গোল না পেয়ে ধ্যানচাঁদের আম্পায়ারকে বলে গোলপোস্ট মাপিয়ে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার গল্প অবধি। আছে আমস্টারডামে এক মহিলার ওয়াকিং স্টিক নিয়ে হকির জাদু দেখানোর গল্প। এসব ঘটনার কোনোটা সত্যি, কোনোটা নয়। যেমন অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহরে চারটে হাতওয়ালা ধ্যানচাঁদের মূর্তির গল্পটি যার প্রতিটি হাতে ধরা নাকি একটি করে হকি স্টিক, এমন মূর্তি কিন্তু সত্যি নেই অথচ খবরের কাগজ, বিভিন্ন ওয়েব সাইটে এসব গল্পের প্রচার নিয়মিত ভাবে চলে আসছে বছরের পর বছর। আসলে ধ্যানচাঁদের জীবনটা এমনই রূপকথার মত যে তা নিয়ে এমন গল্পগাথা রচিত হবেই।
তাঁর নামেই তো আছে এমনই এক গল্প! পিতৃদত্ত নাম ধ্যান সিং সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে বদলে গেল ধ্যানচাঁদে। আসলে সেনাবাহিনীর ডিউটির শেষে রাতেরবেলা চাঁদের আলোতে ঘন্টার পর ঘন্টা অনুশীলন করে যেতেন মানুষটি, সেখান থেকেই ধ্যান সিং হয়ে গেলেন ধ্যানচাঁদ! কিন্তু ধ্যানচাঁদকে সত্যিকারের সম্মান দিতে গেলে এসব গল্পের চেয়েও অনেক বেশি দরকার তাঁর নিষ্ঠা, পরিশ্রম ও দেশের সাফল্যের জন্য সর্বস্ব পণ করার মানসিকতাকে এ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা, সম্মান দেওয়া। মাত্র পাঁচ ফুট সাড়ে ছয় ইঞ্চির এই ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মির ‘ফার্স্ট ব্রাহ্মণ রেজিমেন্টের’ সিপাইয়ের ভারতের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদ হয়ে ওঠার কাহিনী উদ্বুদ্ধ করতে পারে একটা গোটা প্রজন্মকে।