দ্বিতীয় ডিভিশন লিগ দরজায় কড়া নাড়ছে। করোনা পরবর্তী সময়ে এটিই দেশের প্রথম অফিশিয়াল স্পোর্টিং ইভেন্টে হতে চলেছে। ক্লাবগুলি ইতিমধ্যেই তাদের স্কোয়াড শক্তিশালী করার কাজে নেমে পড়েছে, এবং নিজ নিজ শহরে অনুশীলনও শুরু করেছে। দেখে নেওয়া যাক কোন পাঁচ ফুটবলারের উপর নজর থাকবে এবারের লিগে।


আজহারউদ্দিন মল্লিক: মোহনবাগানে সারা জাগানো শুরু করেও আজহারউদ্দিন মল্লিক কোনো কোচের আমলেই প্রথম একাদশে নিয়মিত হতে পারেন নি। সঞ্জয় সেন থেকে শুরু করে শঙ্করলাল চক্রবর্তীর জমানায় যখনই খেলার সুযোগ পেয়েছেন নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন এই বঙ্গ তনয়। কিন্তু বাগানের দ্বিতীয় আই লিগ জয়ের গোটা মরসুমটাই মাঠের বাইরে বসে কাটানোর পর এই উইঙ্গার নিজেকে পুনরায় আবিষ্কার করার লক্ষ্য নিয়ে কলকাতা ছেড়ে বেঙ্গালুরু ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দুই উইংয়েই সমানতালে খেলতে পারা আজহার গোলটাও ভাল চেনেন। ফর্মে থাকলে একাই ম্যাচের ফলাফল বদলে দিতে সক্ষম তিনি।


আনশুমানা ক্রোমা: গত মরসুমের পিয়ারলেসকে একক দক্ষতায় কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন করা আনশুমানা ক্রোমা ভারতীয় ফুটবলে পরিচিত মুখ। বক্স স্ট্রাইকার না হলেও ক্রোমার গোল করার দক্ষতা প্রশ্নাতীত। এর আগে চার্চিল, মোহনবাগান, আইজল এফসি ও ইস্টবেঙ্গলের হয়ে আই লিগ খেলা ক্রোমা নিজে দারুণ সব গোল তো করেনই, আবার গোল করানও বটে। ভবানীপুরে ক্রোমা খেলবেন তাঁর পুরোনো কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীর অধীনে। দ্বিতীয় ডিভিশন লিগে ক্রোমা যদি স্বমহিমায় ধরা দেন তাহলে ভবানীপুরের আই লিগে উঠার সুযোগও বেড়ে যাবে কয়েক গুণ।


রোনাল্ডো অলিভিয়েরা: সাম্প্রতিক কালে ভারতীয় ফুটবলে যে কজন তরুণ প্রতিশ্রুতিমান স্ট্রাইকার রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন গোয়ার রোনাল্ডো অলিভিয়েরা। সালগাওকারের যুব দল থেকে উঠে আসা এই ফুটবলারকে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে ইস্টবেঙ্গল গত মরসুমে সই করিয়েছিল। কিন্তু আলেহান্দ্রো মেনেন্ডেজ-এর জমানায় দলে সুযোগ না পেয়ে রোনাল্ডো পাড়ি জমান আইএসএল দল কেরালা ব্লাস্টার্সে। আসন্ন দ্বিতীয় ডিভিশন লিগে এই ফুটবলার কে বেঙ্গালুরু ইউনাইটেডের হয়ে খেলতে দেখা যাবে। যদি যোগ্য সমর্থন রোনাল্ডো পান, তাহলে বেঙ্গালুরু ইউনাইটেডের তুরুপের তাস তিনিই হতে যাচ্ছেন।


উইলিস প্লাজা: ইস্টবেঙ্গলের জার্সি গায়ে দুরন্ত শুরু করেও নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন উইলিস প্লাজা। কলকাতা ময়দানে বাতিলের তকমা নিয়ে ব্রায়ান লারার দেশের এই স্ট্রাইকার পাড়ি দিয়েছিলেন গোয়াতে। যেখানে চার্চিল জার্সি গায়ে নিজেকে ফিরে পান এই ৩৩ বছর বয়সী ফুটবলার। চার্চিলের হয়ে দুই মরসুম মিলে আই লিগে ২৪ টি গোল করে নিজের জাত চেনানোর পর মহামেডানের হাত ধরে কলকাতায় ফিরেছেন প্লাজা। কথায় বলে কলকাতা ময়দান কাউকে দ্বিতীয় সুযোগ দেয় না। কিন্তু প্লাজা নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে সেই সুযোগ ছিনিয়ে নিয়েছেন। এবার দেখার তিনি সেটা কতটা কাজে লাগাতে পারেন।


ফিলিপ আদজা: খেপের মাঠ থেকে উঠে আসা ফিলিপ আদজা ভারতীয় ফুটবলে তাঁর অভিষেক মরসুমেই মহামেডান জার্সি গায়ে ৪০ টির বেশি গোল করে দলকে ২৭ বছর বাদে বরদলৈ ট্রফি এনে দিয়েছিলেন। গত মরসুমে নেরোকার জার্সিতে আই লিগের নয় ম্যাচে আট গোল করা আদজা তাঁর গতি এবং তীব্র গোল ক্ষুদার জন্যে পরিচিত। ২২ বছর বয়সী ঘানার এই ফুটবলার একজন প্রকৃত ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার। ক্রোমার সাথে তাঁর জুটি জমে গেলে এই আক্রমণভাগ তছনছ করে দিতে পারে চীনের প্রাচীরের মতো অটল রক্ষণকেও।
দ্য ক্যালকাটা মিরর/অজয়