নিজস্ব প্রতিনিধি: মহামেডানের পরিবেশ গত দুই বছরে হটাৎ করে বদলে গেছে। আসলে বদলেছেন দীপেন্দু বিশ্বাস। তাঁর ছোঁয়ায় ক্লাবের সব দিকে পরিবর্তনের জোয়ার এসেছে। তিনি এসে সমর্থকদের হারিয়ে ফেলা স্বপ্ন আবার নতুন করে দেখার শক্তি দিয়েছেন।


গত মরসুমে মহামেডানকে খাদের কিনার থেকে কলকাতা লিগ জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে গেছিলেন এই প্রাক্তন স্ট্রাইকার। দীপেন্দু দায়িত্ব নেওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে দল। দেখা মিলতে শুরু করে বদলে যাওয়া এক মহামেডানের। অনেক গোলের সুযোগ তৈরি করা, সুযোগ কাজে লাগানো, প্রতিপক্ষকে কম সুযোগ দেওয়া-সব দিক থেকেই ব্যাপক উন্নতি করে মহামেডান। এই পরিবর্তনের মূলে রয়েছেন দীপেন্দু; যিনি স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন নতুন অধ্যায়ের, প্রতিজ্ঞা করেছিলেন ভালো কিছুর। পরাজয়ে ভেঙ্গে পড়েননি দীপেন্দু। তিনি আস্থা রেখেছেন, আস্থা যুগিয়েছেন৷ অনুপ্রেরিত করেছেন এগিয়ে যাওয়ার মন্ত্রনায়।


পেশাদার ফুটবলের কোনো পর্যায়েই কোচিং করার কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও দীপেন্দু তাঁর ম্যান ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা দিয়ে একটা সাদা মাটা দলকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সুব্রত ভট্টাচার্যের রেখে যাওয়া মহামেডান দলের সাথে দীপেন্দু দলের দিকে তাকালে বোঝা যাবে পরিবর্তনের মাত্রা কতটুকু। প্রয়াত অমল দত্তের এই ছাত্র আক্রমণাত্মক ফুটবলে বিশ্বাসী, বিশ্বাসী দ্রুতগতির ফুটবলে আর গোল করতে। তাই তিনি প্রথমে আক্রমণের দিক মেরামত করার চেষ্টা করেন।
আক্রমণভাগ মেরামত করলেও, রক্ষণের অবস্থা ছিলো নড়বড়ে। দীপেন্দু বুঝতে পেরেছিলেন, দুর্বল রক্ষণ নিয়ে মহামেডান বেশি দূর যেতে পারবে না। আর পর্যাপ্ত খেলোয়াড় না নিয়ে হাই প্রেসিং ফুটবল খাটবে না। কিন্ত সবদিকে পরিবর্তন তো আর একই মরসুমে আনা সম্ভব নয়। তাই দীপেন্দু সময় নিলেন পুরো দুটি মরসুম। এবং অবশেষে তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড পেয়েছেন যা নিয়ে দ্বিতীয় ডিভিশন লিগ থেকে আই লিগ সবখানে মাথা তুলে লড়তে পারবে মহামেডান।


দীর্ঘদিন পর মহামেডানের এবারের দলটাই সম্ভবত সবচেয়ে মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ে পরিপূর্ণ। গোলকিপিং থেকে শুরু করে ডিফেন্স, মিডফিল্ড, ফরওয়ার্ড লাইন—সব ক্ষেত্রেই একাধিক প্রতিশ্রুতি সম্পন্ন খেলোয়াড়দের উপস্থিতি। দলে নতুন মুখ আসার পাশাপাশি আছেন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়েরাও। যে কোনো টুর্নামেন্টে যেটা অনেক বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে, সেটি হলো শক্তিশালী বেঞ্চ। এখানেও দুর্বলতা নেই মহামেডানের। বেঞ্চ দিয়েই আরেকটি একাদশ গড়ে ফেলা সম্ভব। প্রতিটি জায়গার জন্য একটা দলে যখন তীব্র লড়াই হয় বেঞ্চ বনাম মূল একাদশের সঙ্গে, সেটি একটি দলের ভেতর থেকে বের করে আনে সেরাটা। এই দলকে হারাতে অন্য দলগুলোকে প্রচুর ঘাম ঝরাতে হবে এটা বলে দেওয়া যায়।
দ্য ক্যালকাটা মিরর