দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: দরজায় কড়া নাড়ছে আই লিগ দ্বিতীয় ডিভিসন। দলও মোটামুটি তৈরি। কিন্তু সমস্যার সূত্রপাত আনোয়ার আলির শারিরীক সমস্যা নিয়ে। এমন রোগে আক্রান্ত হয়তো চলতি মরসুমে তাঁর সার্ভিস পাবে না মহামেডান স্পোর্টিং। যেহেতু তাঁকে ধরেই এগোচ্ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট,তাই তাঁকে না পেলে রক্ষন যে দুর্বল হয়ে পড়বে কোনো সন্দেহ নেই। সেই জন্য তড়িঘড়ি রক্ষনের আরও একজন খেলোয়াড়কে উড়িয়ে আনা হল দিল্লি থেকে।
নাম মুনমুন টিমোথি লুগুন! সমর্থক মহলে পরিচিত নাম না হলেও, জীবনপঞ্জী খুব একটা খারাপ নয়। তবে তাঁকে যে আনোয়ারের পরিবর্ত হিসাবে আনা হয়েছে বলা যাবে না। কেননা ইনি মূলতঃ লেফ্ট ব্যাকের খেলোয়াড়।
মুনমুন এদিন সকালে কলকাতায় পা রেখেই সোজা কল্যাণীতে দলের কাছে চলে গিয়েছেন, যেখানে তার বাধ্যতামূলক কোভিদ-১৯ টেস্ট হবে যাতে নেগেটিভ আসলে তবেই তিনি অনুশীলন শুরু করার অনুমতি পাবেন।
মুনমুন আদতে ঝাড়খন্ডের, পাহানতলি, জালদেগা অঞ্চলের বাসিন্দা হলেও, এখন পাকাপাকিভাবে থাকেন রাজধানী দিল্লিতে। মুনমুন তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০১০ সালে সিমলা ইয়ংস ফুটবল ক্লাব থেকে। সেবার দিল্লির এই দলটি দ্বিতীয় ডিভিসন আই লিগেও অংশগ্রহন করে। এছাড়াও, তিনি তাঁর রাজ্যের যুব দলের অধিনায়ক হিসাবে বিসি রায় ট্রফিও খেলেন।
এরপর ৫ ফুট সাড়ে ৯ ইঞ্চির মুনমুন ২০১২-২০১৩ মরসুমে বাইচুংয়ের দল ইউনাইটেড সিকিম এর ২৪ টি ম্যাচে অংশ গ্রহন করেন। এরপর রাঙ্গদাজিয়েদ এর ১৮ ম্যাচ এবং তার পরের মরসুমে তথা ২০১৪ সালে আইএসএল এর দল দিল্লি ডাইনামোসের হয়ে মাঠে নামেন তিনি। যদিও একটির বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি।
এরপর পর্যায়ক্রমে পুনে এফসি, মিনার্ভা পাঞ্জাব, মুম্বই সিটি, মুম্বই এফসি হয়ে ২০১৭ সালে আবার ফেরেন দিল্লি ডাইনামোসে। তবে, এবার আর রিজার্ভ বেঞ্চে বসে কাটাতে হয়নি, ১২ টি আইএসএল ম্যাচে দিল্লির জার্সি গায়ে মাঠে নামেন তিনি।
অতঃপর, ২০১৯ সালে মহামেডানের বর্তমান হেড কোচ ইয়ান ল-এর তত্বাবধানে পাঞ্জাব এফ সি’র হয়ে ৮ ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেন ২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
কোচ ইয়ান ল-এর সুপারিশেই তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিষয়ে মহামেডান সচিবে ওয়াসিম আক্রামের কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন: ”কোচের পছন্দেই তাঁকে নেওয়া হয়েছে। আসলে আমরা কোচের সাথে আলোচনা করেই বিভিন্ন পজিশনের খেলোয়াড় নিচ্ছি কেননা, আমাদের চেয়ে তিনি এই বিষয়ে বেশি পারদর্শী। ম্যানেজমেন্টের কাজ হলো কোচের পছন্দ মতো ফুটবলার উপহার দেওয়া, কোচের কাজ ভালো ফুটবল উপহার দেওয়া বা ফুটবলারদের থেকে সেরাটা বার করে আনা। আশা করি এবার আমরা সফল হবো।”
কলকাতায় পা দেওয়ার পর মুনমুন জানিয়েছেন, “মহামেডান স্পোর্টিংয়ে যোগ দিতে পেরে আমি উচ্ছ্বসিত। আবারও কোচ ইয়ান ল-এর অধীনে খেলার অপেক্ষায় রয়েছি। আমার উপর আস্থা দেখানোর জন্য আমি মহামেডান স্পোর্টিং কর্মকর্তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি মহামেডানের হয়ে আমার সেরাটা দিতে চাই।”
আশাবাদী সমর্থকরাও। এখন দেখার ‘মুনমুন’ ‘জ্যোৎস্না’ ছড়াতে পারেন কিনা!
দ্য ক্যালকাটা মিরর/মোস্তাফিজুর রহমান