দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে বড় পুঁজি এনে দিয়েছিলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। তবে তার ব্যাটিং ছাপিয়ে গেলেন সঞ্জু স্যামসন ও রাহুল তেওয়াটিয়া। আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মহাকাব্যিক জয় পেল রাজস্থান রয়্যালস।
আগে ব্যাট করে ২ উইকেট ২২৩ রান করে পাঞ্জাব। জবাবে স্যামসন ও তেওয়াটিয়ার দৃঢ়তায় তিন বল হাতে রেখেই চার উইকেটে জয় তুলে নেয় রয়্যালসরা।
টসে জিতে পাঞ্জাবকে ব্যাট করতে পাঠান রয়্যালস অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টসটা রয়্যালসদের বিপক্ষে যায়। শুরুতেই রয়্যালস বোলারদের ওপর চড়াও হয় পাঞ্জাব। ওপেনার মায়াঙ্ক ও কে এল রাহুল তোলেন ঝড়। তাদের সামনে রয়্যালস পেসার কিংবা স্পিনার কেউই সুবিধা করতে পারেননি। ওপেনিং জুটিতে ১৮৩ রান যোগ করেন দু’জনে।


এক প্রান্তে উইকেট ধরে রাখা রাহুল ৫৪ বলে ৭ টি চার ও ১ টি ছয় সহ ৬৯ রান করে আউট হন। তাণ্ডব চালিয়ে ২১২.০০ স্ট্রাইক রেটে মায়াঙ্ক ১০৬ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। ৫০ বলে খেলা এই ইনিংস সাজানো ছিলো ১০ টি চার ও ৭ টি ছয় দিয়ে। পরে চারে নামা নিকোলাস পুরান ৩ টি ছয় সহ ৮ বলে ২৫ রান করে শেষ তুলি টানেন। শারজাহর ব্যাটিং স্বর্গে ২২৩ রানে থামে পাঞ্জাব ইনিংস।
রয়্যালসদের হয়ে অঙ্কিত রাজপুত ও টম করন একটি করে উইকেট নেন। রয়্যালসদের সেরা ভরসা জোফ্রা আর্চার। পাঞ্জাব ব্যাটসম্যানরা তার ওপরই বেশি চড়াও হন। চার ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪৬ রান খরচ করলেও এই ইংলিশ ফাস্ট বোলারের উইকেটের ভাড়ার শূন্যই থাকে।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা খায় রয়্যালস। টপ অর্ডারে রয়্যালসদের বড় ভরসা ছিলেন জস বাটলার। তৃতীয় ওভারেই শেলডন কট্রেলের বলে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে সরফরাজ খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। সেই ধাক্কা সামাল দিয়ে রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন স্যামসন ও স্মিথ। দু’জনে যোগ করেন ৮১ রান। স্মিথ ২৭ বলে ৫০ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে যখন সাজঘরে ফিরে যান দলের রান ৯ ওভারে ১০০।


এর পরই ম্যাচে আসে উত্তেজনা। চার নাম্বারে রয়্যালসরা পাঠায় অলরাউন্ডার রাহুল তেওয়াটিয়াকে। রানের চাকা দ্রুতগতিতে ঘোরাতে পারেননি তিনি। তেওয়াটিয়া একের পর এক ডট বল খেলতে থাকলে চাপ বাড়তে থাকে অপর প্রান্তে থাকা সামসনের উপর।
কেরালার এই তরুণ ব্যাটসম্যান বুক চিতিয়ে লড়ে যান। কিন্তু তিনি ৪২ বলে ৮৫ রান করে মোহাম্মদ সামির বলে উইকেটের পিছনে রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে যখন ফেরেন তখন পাঞ্জাব ভেবেছিল ম্যাচ তাঁদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। কিন্তু এর পরেই খোলস ছেড়ে বার হন তেওয়াটিয়া।
শেলডন কট্রেলের করা ১৮তম ওভারে পাঁচটি ছয় মেরে রয়্যালসদের ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন তেওয়াটিয়া। ৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন হরিয়ানার এই বা হাতি ব্যাটসম্যান। অথচ ১০ মিনিট আগেও ১৯ বলে ৮ রানে খেলছিলেন তিনি।
১৮ বল ৫১ রান থেকে ম্যাচের সমীকরণ এসে দাঁড়ায় ১২ বলে ২১ রানে। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে রবিন উথাপ্পাকে আউট করে সামি পাঞ্জাবকে ম্যাচে ফেরার আশা দেখালেও; আর্চার পর পর দুই বলে ছয় মেরে রয়্যালসদের জয়ের কাছে নিয়ে যান।
ওভারের শেষ বলে তেওয়াটিয়া ৩১ বলে ৭ টি ছয় দিয়ে সাজানো সাজানো ৫৩ রানের অতিমানবীয় ইনিংস খেলে আউট হলেও; ততক্ষনে রয়্যালসদের জয় নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন তিনি। এর পর মুরুগণ অশ্বিনের বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে তিন বল বাকি থাকতেই রয়্যালসদের জয়ের বন্দরে পৌছে দেন টম করন।
পাঞ্জাবের হয়ে বল হাতে সামি সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট পান। কট্রেল, জেমস নিশাম ও অশ্বিন একটি করে উইকেট লাভ করেন।
স্যামসন ম্যাচসেরা হলেও এই পুরস্কার তেওয়াটিয়া পেলে কিছু বলার থাকতো না।
এটাই আইপিএলের ইতিহাসে সব থেকে বড় সফল রান চেস। এর আগে ২০০৮ সালে রয়্যালসরা ডেকান চার্জার্সের বিরুদ্ধে ২১৬ রান তাড়া করে জিতেছিল।