একদিকে চারবার আইপিএল জয়ী মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স অধিনায়ক রোহিত শর্মা, অপরদিকে বেঙ্গালুরু জার্সিতে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ডুয়েল বোধহয় একেই বলে। ক্রিকেটফ্যানেদের জন্যেও আজকের লড়াই যে এক মহারণ তার আলাদা করে বলে দেবার প্রয়োজন নেই। গতম্যাচেই কলকাতাকে ৪৯ রানের বড় মার্জিনে পরাস্ত করে জয়যাত্রা শুরু করেছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ৮০ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। প্রথম ম্যাচে চেন্নাইয়ের কাছে পরাজিত হবার পর জয়ের সরণিতে ফিরে আসা তাদের পক্ষে ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া দ্বিতীয় ম্যাচে দলগত প্রদর্শনও ছিল যথেষ্ট ভালো। রান পেয়েছিলেন সূর্যকুমার যাদব, সৌরভ তিওয়ারিরা আর বোলিংয়ে তাদের যোগ্য সঙ্গত দিয়েছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট,জেমস প্যাটিনসন, যশপ্রীত বুমরাহ এবং রাহুল চাহার। প্রথম ম্যাচের দুর্বলতাগুলি অনেকটাই ঢাকা পড়ে গেছে মুম্বাইয়ের দ্বিতীয় ম্যাচে। তাদের চিন্তার কারন হিসাবে একমাত্র উঠে আসে হার্দিক পান্ডের নাম।কোমরের চোট সারিয়ে ফেরার পর এখনো একটি ম্যাচেও বোলিং করতে দেখা যায়নি তাকে। ব্যাটিংয়েও দুটি ম্যাচে তেমন স্বচ্ছন্দ হতে পারেননি হার্দিক। সেক্ষেত্রে এখন তাকে মুম্বাই দলের উইক লিংক হিসাবে চিহ্নিত করা যেতেই পারে।
অপরপক্ষে বিরাট কোহলির আর.সি.বি-র ক্ষেত্রে চিন্তার অবকাশ অনেক বেশি। দুটি ম্যাচই রান পাননি তারকা ব্যাটসম্যান বিরাট। গত ম্যাচে দুটি সহজ ক্যাচও পড়েছে তার হাত থেকে। প্রথম ম্যাচে দেবদূত পাডিকালের দেওয়া অসাধারণ অর্ধশত রানের দৌলতে সহজ জয় পেয়েছিল তারা। কিন্তু গত ম্যাচে যেভাবে ভেঙে পড়েছে ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটিং তা আবার গত বছরের দুঃস্বপ্নের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে অ্যারন ফিঞ্চও নিজের নামের প্রতি তেমন সুবিচার করতে পারেননি। দুটি ম্যাচেই একমাত্র নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ছিলেন সেই এ.বি. ডিভিলিয়ার্স। এরইমধ্যে বিরাটের রান না পাওয়া আরো বেশি ভাবিয়ে তুলেছে দলকে। গত ম্যাচে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে ২০৬ রান তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত কুড়ি ওভারও খেলতে পারেনি আর.সি.বি।শুধু ব্যাটিং নয় চিন্তার অবকাশ রয়েছে বোলিং নিয়েও। যুবেন্দ্র চাহাল এবং অলরাউন্ডার শিবম দুবে ছাড়া বল হাতে তেমন একটা সফল হতে পারেননি কেউই। বোলিং আক্রমনকে আরো শক্ত পোক্ত করতেই দক্ষিণ আফ্রিকার অভিজ্ঞ ফাস্ট বোলার ডেল স্টেনকে ধরে রেখেছিল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর।কিন্তু গত দু ম্যাচে স্টেনের প্রদর্শনও তেমন উল্লেখযোগ্য নয়।ভারতীয় পেস বোলারদের মধ্যে নবদীপ সাইনি কিছুটা আশা জাগালেও ধারাবাহিকতার অভাব ভোগাচ্ছে তাকে। একই কথা বলা চলে উমেশ যাদবের ক্ষেত্রেও। তাই সর্বোপরি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে পরাস্ত করতে গেলে দলের ভারসাম্য নিয়ে অনেকটাই ভাবতে হবে বিরাটকে। তাছাড়া একথা মনে রাখা দরকার যে মুম্বাইয়ের বোলিং যথেষ্ট যথেষ্ট শক্তিশালী। সেক্ষেত্রে কোহলি ও তার দল কিভাবে ট্রেন্ট বোল্ট, জেমস প্যাটিনসন ও যশপ্রীত বুমরাহের ত্রিফলা আক্রমনকে সামলান সেটিও একটি দেখার বিষয়।
রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (সম্ভাব্য দল)ঃ দেবদূত পাডিকাল , অ্যারন ফিঞ্চ,বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), এ.বি ডিভিলিয়ার্স, যশুয়া ফিলিপি (উইকেটকিপার)/মঈন আলি, ওয়াশিংটন সুন্দর, শিবম দুবে, ডেল স্টেন, নবদীপ সাইনি,উমেশ যাদব, যুবেন্দ্র চাহাল।
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স (সম্ভাব্য দল)ঃ
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক),কুইন্টন ডি কক (উইকেট কিপার),সূর্য কুমার যাদব, সৌরভ তিওয়ারি, হার্দিক পান্ডে,কুনাল পান্ডে, কিরণ পোলার্ড, ট্রেন্ট বোল্ট, জেমস প্যাটিনসন,রহুল চাহার, যশপ্রীত বুমরাহ।