দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ইশান কিশান ও কাইরণ পোলার্ডের লড়াই কাজে এলো না। মরসুমের দ্বিতীয় সুপার ওভারে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় জয় তুলে নিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।
অ্যারন ফিঞ্চ, দেবদত্ত পাদিক্কাল ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের হাফ সেঞ্চুরি ও পরে শিবম দুবের ঝড়ো ব্যাটিং-এ ভর করে ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০১ রান সংগ্রহ করে আরসিবি। জবাবে মুম্বাইও থামে ২০১/৫-এ। ৯৯ রানের ইনিংস খেলেও মুম্বাইকে জেতাতে পারেননি কিশান। ২০তম ওভারে জয়ের জন্য ১৯ রান প্রয়োজন ছিল মুম্বাইয়ের। কিন্তু ইসুরু উডানার করা ওই ওভারে ১৮ রান তুলতে পারে মুম্বাই। ম্যাচ হয় টাই।
নভদীপ সাইনির নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে মাত্র ৭ রানই তুলতে পারে মুম্বাই। টার্গেটটা আরসিবি সহজেই পেরিয়ে যায়।
টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে আরসিবি। শুরুতেই মুম্বাই বোলারদের ওপর চড়াও হন ফিঞ্চ ও পাডিক্কল। ওপেনিং জুটিতে ৮১ রান যোগ করে আউট হন ফিঞ্চ। তবে ফেরার আগে ৩৫ বলে ৭ টি চার ও ১ টি ছয় দিয়ে সাজানো ৫২ রানের ইনিংস খেলে আরসিবিকে একটি শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়ে যান অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে অধিনায়ক। বিরাট ১১ বলে ৩ রান করে ফিরলেও। ডি ভিলিয়ার্স রানের চাকা সচল রাখেন।
তাণ্ডব চালিয়ে ২২৯.১৭ স্ট্রাইক রেটে ৫৫ রান করেন এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। ২৪ বলে খেলা এই ইনিংস সাজানো ছিলো ৪ টি চার ও সমসংখ্যাক ছয় দিয়ে। ডি ভিলিয়ার্সকে যোগ্য সঙ্গত দেন তরুণ পাদিক্কাল। ৫ টি চার ও ২ টি ছয় সহযোগে ৪০ বলে করেন ৫৪ রান। শিবম দুবে ১০ বলে ২৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে শেষ তুলি টানেন। মুম্বাইয়ের হয়ে ট্রেন্ট বোল্ট সর্বোচ্চ ২ টি উইকেট পান। এছাড়া রাহুল চাহার একটি উইকেট নেন।
লক্ষ্যের তাড়া করতে নামা মুম্বাই ইনিংসে শুরুতেই ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা রোহিত শর্মাকে হারায়। ৯ রানে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে তারই হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই উডানার বলে ডি ভিলিয়ার্সের গ্লাভস বন্দি হয়ে শূন্য রানে ফিরে যান সূর্যকুমার যাদব। পরে কুইন্টন ডি কক ও কিশান ইনিংস মেরামত করার চেষ্টা করলেও এই জুটিও ক্রিজে বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলীয় ৩৯ রানের মাথায় ডি ককের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে মুম্বাই।
হার্দিক পান্ডিয়া ক্রিজে এসে উইকেটের পতন রোধ করলেও স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে রান তুলতে রান তুলতে ব্যার্থ হন এই অলরাউন্ডার। ১৩ বল খেলে ১৫ রান করে মরসুমের প্রথম ম্যাচ খেলা অ্যাডাম জাম্পার ফাঁদে পরেন তিনি। এই সময় মুম্বাইয়ের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ৪৬ বলে ১২৪ রান। দুবাইয়ের বড় মাঠে যা এক প্রকার অসম্ভবই, বিশেষত যখন রোহিত, ডি কক, পান্ডিয়ার মতো বিগ হিটাররা ফিরে গেছেন সাজঘরে।
কিন্তু পোলার্ড অন্য কিছুই ভেবে রেখেছিলেন। নিজের ইনিংসের প্রথম বল থেকেই ‘বিস্ট মোড’ অন করে উডানা, যুজভেন্দ্র চাহাল, জাম্পাদের একের পর বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে মুম্বাইকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। কিশানও পিছিয়ে থাকেননি। তিনিও খেলতে থাকেন একের পর এক চোখ ধাঁধানো শট। এই জুটির সামনে আরসিবির পেসার কিংবা স্পিনার কেউই সুবিধা করতে পারেননি।
ম্যাচটা সারাক্ষণ পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকে। একবার আরসিবির দিকে তো পরক্ষনেই মুম্বাইয়ের দিকে।
শেষ ওভারে বাকি ছিলো ১৯ রান। পর পর দুই বলে ওভার বাউন্ডারি হওয়ার পরেও কিশানের একটা ছোট্ট ভুলে আরসিবি ম্যাচে ফিরে আসে।
আগের বলেই ছয় হাকিয়ে ম্যাচ ৭০% নিজেদের করে নিয়েছিলেন কিশান। সেই সাথে নিজের ব্যাক্তীগত স্কোর গিয়ে দাড়ায় অপরাজিত ৯৯। নিজের প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরি করতে তার দরকার ছিলো মাত্র এক রান। এদিকে দলের প্রয়োজন ২ বলে ৫ রান।
সফলতার একদম উচ্চতায় উঠার মুহুর্তেও নিজের কথা না ভেবে দলের কথা চিন্তা করে আবারো ছক্কা হাকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে থাকা ফিল্ডারের হাতে তালুবন্দি হয়ে ৯৯ রানে আউট হয় ইশান। তবে শেষ বলেও পোলার্ড চার মারলে স্কোর টাই হয়। ম্যাচ যায় সুপার ওভারে।
মরসুমের দ্বিতীয় সুপার ওভারে সাইনির নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে মাত্র ৭ রানই তুলতে পারে মুম্বাই। টার্গেটটা আরসিবি সহজেই পেরিয়ে যায়।
দ্য ক্যালকাটা মিরর/অজয়