দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: চলতি আইপিএলে জয়ের হ্যাট্রিকের লক্ষ্যে এদিন মাঠে নেমেছিল রাজস্থান রয়্যালস, কিন্তু হলো ঠিক উল্টোটা ব্যাটে-বলে চূড়ান্ত পেশাদার পারফর্মেন্সের নমুনা রেখে ৩৭ রানে ম্যাচ জিতে মরসুমের দ্বিতীয় জয় তুলে নিলো কলকাতা নাইট রাইডার্স।
শুভমান গিলের ৪৭ ও ইয়ন মরগ্যানের শেষমূহুর্তের ২৩ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও ইনিংসে ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান সংগ্রহ করে নাইটরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত অন্তরালে উইকেট হারানোর কারণে রয়্যালসরা ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রানই তুলতে পারে।
এদিন টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন রয়্যালস অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। কেকেআর ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে গত ম্যাচের নায়ক গিলের সাথে নামেন সুনীল নারিন। তবে রান তোলার গতিটা ছিল মন্থর। সেটা বাড়াতে গিয়েই দলীয় ৩৬ রানে জয়দেব উনাদকাটের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফিরে যান নারিন। ফেরার আগে ১৪ বলে ১ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে ১৫ রান করেন তিনি।
নারিন ফিরে যাওয়ার দলের পর হাল ধরেছিলেন গিল-নিতিশ রাণা জুটি। কিন্তু এই জুটিও ক্রিজে বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলীয় ৮২ রানের মাথায় রাণা ২২ রান করে রাহুল তেওয়াটিয়ার বলে ফিরে যান।
স্লো-গতিতে রান ওঠায় ব্যাটিংঅর্ডারে পরিবর্তন এনে আন্দ্রে রাসেলকে সেকেন্ডডাউনে নামানো হয়। তাকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন গিল। তবে তিনিও সতীর্থকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। খানিক পরই ৩৪ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে ৪৭ রান করে জোফ্রা আর্চারের শিকার হন এই তরুণ ওপেনার ব্যাটসম্যান।
তার পর ক্রিজে আসেন দিনেশ কার্তিক। কিন্তু ঝড় তুলতে পারেননি তিনিও। মাত্র এক রান করে আর্চারের বলে উইকেটের পিছনে জস বাটলারের গ্লাভস বন্দি হয়ে ফেরেন নাইট অধিনায়ক।
রাসেল কিছু বড় শট খেলে ঝড়ের পূর্বাভাস দিলেও তরুণ বোলার অঙ্কিত রাজপুতের বলে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পরেন এই জ্যামাইকান অলরাউন্ডার। ফেরার আগে ১৪ বলে ৩ ছয়ের সাহায্যে ২৪ রান করেন তিনি।
শেষের দিকে মরগ্যান চালিয়ে খেলায় ১৭৪ রানের স্কোরে পায় কেকেআর। রয়্যালসদের হয়ে হয়ে বল হাতে আর্চার সর্বোচ্চ ২ টি উইকেট পান। এছাড়া উনাদকাট, তেওয়াটিয়া, রাজপুত ও টম করন একটি করে উইকেট লাভ করেন।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় রয়্যালস। দ্বিতীয় ওভারেই মাত্র তিন রান করে প্যাট কামিন্স-এর বলে উইকেটের পিছনে কার্তিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্মিথ।
শুরুর ধাক্কা সামলিয়ে ওঠার আগেই রয়্যালস শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন শিবম মাভি। টপ অর্ডারে রয়্যালসদের বড় ভরসা সঞ্জু স্যামসন ৮ রান করে নারিনের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন।
এরপর রবিন উথাপ্পাকে নিয়ে জুটি গড়েন বাটলার। কিন্তু দলীয় ৩৯ রানে দারুণ শুরুর পর ২১ রান করে বরুণ চক্রবর্তীর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাটলারও। চাপে পড়ে যায় রয়্যালস। সেই চাপ আর কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি তাদের পক্ষে।
এর পরে পরেই উথাপ্পা আর রিহান পরাগও প্যাভেলিয়ানের পথ ধরেন। দুটি উইকেটই যায় তরুণ ফাস্ট বোলার কমলেশ নাগরকোটির খাতায়।
গত ম্যাচের নায়ক তেওয়াটিয়ার কাছ থেকে আজও রয়্যালসরা অসাধ্য সাধনের আশা রাখলেও। এদিন ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে ব্যার্থ হন হরিয়ানার এই অলরাউন্ডার। তেওয়াটিয়া ১৪ রান করে চক্রবর্তীর গুগলির ফাঁদে পরে বোল্ড হতেই সব আশা শেষ হয়ে যায় রয়্যালসদের।
করন ৩৬ বলে ২ চার ও ৩ ছয়ের সাহায্যে অপরাজিত ৫৪ রান করলেও। তিনি শুধু পরাজয়ের ব্যাবধানই কম করেছেন। ১৩৭ রানে থামে রয়্যালস ইনিংস।
কেকেআরের হয়ে হয়ে মাভি, নাগরকোটি ও চক্রবর্তী ২ টি করে উইকেট পান। এছাড়া কামিন্স ও কুলদীপ যাদব একটি করে উইকেট লাভ করেন।
মাভি তাঁর দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য ম্যাচ সেরা হয়েছেন। তিনি ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২০ রান দিয়ে বাটলার ও স্যামসনের মূল্যবান উইকেট তুলে নেন।