মন খারাপ, মানসিক চাপ, বিরক্তিকর পরিস্থিতি। করোনাকালে ভীষণ খারাপ অবস্থায় আছেন বাংলার তারকা খেলোয়াড়রা। তবুও জীবনের গতি স্তব্ধ হয়ে যায়নি। নিজেরাই নিজেদের মতো করে দীর্ঘ ‘ছুটি’-তে সময় কাটানোর পথ বের করে নিয়েছেন। যেমন বাংলা ও ভারতের নামী জিমন্যাস্ট মন্দিরা হাজরা চৌধুরি শিখে ফেলেছেন ড্রাইভিং। শুধু কি তাই? ছবি আঁকছেন, রান্না করছেন, গল্পের বই পড়ছেন, টুকটাক সিনেমাও দেখছেন। মন্দিরা বলছিলেন, ‘খেলাধুলো করা মানে ব্যস্ত জীবন। হঠাৎ এই করোনা এসে জীবনের গতিটাই আটকে দিয়েছে।
আরও পড়ুন : অলিম্পিক সোনাজয়ী দলের ৪ জিমন্যাস্ট ও কোচকে হত্যা করেছিল হিটলারের নাৎসি বাহিনী-নির্মল কুমার সাহা
যখন ফুল লকডাউন চলছিল, তখন তো ভয়াবহ অবস্থা ছিল। কী করব, ভেবেই পাচ্ছিলাম না। ছোটবেলায় ছবি আঁকতাম। খেলাধুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মাঝে আর ওদিকে নজর দেওয়া হয়নি। ফুল লকডাউনের সময় আবার ছবি আঁকা শুরু করি। রান্না করার সময়ও আগে পাওয়া যেত না। সেটাও শুরু করলাম। এখন অনেক নতুন নতুন খাবার তৈরি করা শিখে ফেলেছি। এছাড়া অল্পস্বল্প সিনেমা দেখা, গল্পের বই পড়াও আছে। আনলকের সময় অবশ্য অত কিছু করতে পারছি না। সময় পাচ্ছি না। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চলছে। তবে আনলকের সময় বড় কাজটা করে ফেলেছি। টানা সময় না পাওয়ায় ড্রাইভিং শিখতে পারছিলাম না। ড্রাইভিংটা এবার শিখে ফেলেছি। এখন লাইসেন্স হাতে পাওয়ার অপেক্ষায়।’
আরও অনেকের মতো করোনায় অনেক ক্ষতি হয়েছে মন্দিরারও। জাতীয় প্রতিযোগিতার জন্য নিজেকে যখন তৈরি করছিলেন তখনই শুরু হয়ে যায় করোনা-লকডাউন। বললেন, ‘শুধু তো ন্যাশনাল নয়, ছিল আরও অনেক প্রতিযোগিতা। ন্যাশনাল ক্যাম্প, রেলের ক্যাম্প, ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন, আরও কত কী! সব অন্ধকারে চলে গেল।’ চাকরি করেন ইস্টার্ন রেলে। এখন সপ্তাহে তিন দিন বরানগর থেকে শিয়ালদহের অফিসে যাচ্ছেন। আনলক পর্বে এসে কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দীর অনলাইন ক্লাসে ফিজিক্যাল ট্রেনিং করছেন। পাড়ার ক্লাব ‘ছুটির বৈঠক’-এর মাঠে যাচ্ছেন সকালে দৌড়তে, ফিজিক্যাল ট্রেনিং করতে। আর অ্যাপারেটার্স প্র্যাকটিস? মন্দিরা জানালেন, শুভঙ্কর দে-র কাছে উত্তরপাড়া জিমন্যাসিয়ামে কয়েকদিন গিয়েছেন, অ্যাপারেটার্স প্র্যাকটিস করতে। প্রয়োজনে পরামর্শ নিচ্ছেন কোচ মিনারা বেগম, অশোককুমার মিশ্রর। কিন্তু সবই চলছে বিক্ষিপ্তভাবে। মন্দিরা বললেন, ‘উপায় নেই, সবই মানিয়ে নিতে হচ্ছে। জীবনে এরকম পরিস্থিতির মুখে কখনও পড়তে হবে, কে আর ভেবেছিল!’