দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আজ আইপিএলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে দ্বিতীয় পর্বে মুখোমুখি হয়েছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন মুম্বাই ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা।
কিন্তু শুরুটা আজ মোটেই ভাল হয় নি তাদের জন্য। ম্যাচের শুরুতেই অর্শদীপ সিংহের বলে প্লেড অন হয়ে ফিরে যেতে হয় রোহিতকে। তবে আজ আবারও মুম্বাইকে ম্যাচে ফেরান কুইন্টন ডিকক। অন্যপ্রান্তে একের পর এক উইকেট হারালেও ক্রুনাল পান্ডের সাথে পার্টনারশিপ গড়ে মুম্বাইকে বড় রানের দিকে নিয়ে যান তিনি। রবি বিশনোইয়ের বলে আউট হবার আগে অবধি ৩০ বলে ৩৪ রান করেন ক্রুণাল। অন্যপ্রান্তে মাত্র ৪৩ বলে তিনটি ছয় ও তিনটি চারের সাহায্যে ৫৩ রানের সাবধান ইনিংস খেলেন তিনি।
তবে ম্যাচের মূল পার্থক্য করে দেন কিরণ পোলার্ড এবং ন্যাথন কুন্টারনাইল। মাত্র ১২ বলে চারটি ছয় ও একটি চারের সাহায্যে বিধ্বংসী ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন পোলার্ড। অন্যপ্রান্তে ১২ বলে দুরন্ত ২৪ রান করেন কুন্টারনাইল। মূলত তাদের এই অসাধারণ ব্যাটিংয়ের দৌলতেই ১৭৭ রানের বড় টার্গেট খাড়া করে মুম্বাই। পাঞ্জাবের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট তুলে নেন শামি এবং অর্শদীপ।
আরও পড়ুনঃ আবুধাবিতে অনুকূল নয় পিচ, কার্তিকের চেষ্টায় ১৬৩ রানে পৌঁছালো কলকাতা
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন রাহুল এবং মায়াঙ্ক আগারওয়াল।কিন্তু ব্যক্তিগত ১১ রানের মাথায় আগারওয়ালকে ফিরিয়ে দেন বুমরাহ। কিন্তু কে এল রাহুল আজও শুরুটা করেন মারমুখী। অন্যদিকে খোলস ছেড়ে বেরোতে শুরু করেন গেইলও।কিন্তু শুরুতে কিছু বড় শট পেলেও রাহুল চাহারের বলে বড় শট নিতে গিয়ে ২৪ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
মাঠে নেমে বিধ্বংসী শুরু করেন পুরানও।কিন্তু বেশিক্ষন ক্রীজে স্থায়ী হতে পারেননি তিনি।মাত্র ১২ বলে ২৪ রান করে বুমরাহের বলে বড় শট নিতে গিয়ে আউট হন তিনি। রহুল চাহার এর বলে খাতা খোলার আগেই আউট হয়ে ফিরে যান ম্যাক্সওয়েলও।তবে অন্যপ্রান্তে ক্রমাগত উইকেটের পতন হলেও ধৈর্য হারাননি কে এল রাহুল। মাত্র ৩৪ বলে চারটি চার ও তিনটি ছয়ের সাহায্যে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি।
তবে বুমরাহ, কুন্টারনাইলদের মত বোলারদের সামনে শেষ ছয় ওভারে ৬০ রান তুলে নেওয়া তার পক্ষেও ছিল যথেষ্ট কঠিন। তবে লড়াইয়ের মাঠ ছাড়েননি তিনি।দীপক হুডার সঙ্গতে বুমরাহ এবং কুন্টারনাইলের ওভারে বেশকিছু বড় শট তুলে নেন রাহুল। কিন্তু ১৮ তম ওভারে স্পেলে ফিরে দুর্দান্ত ইয়র্কারে রাহুলের উইকেট ভেঙে দেন বুমরাহ।সাজঘরে ফেরার আগে অবধি মাত্র ৫১ বলে সাতটি চার ও তিনটি ছয়ের সাহায্যে ৭৭ রানের দুরন্ত ইনিংসের দেন তিনি।
শেষ দু ওভারে পাঞ্জাবের জয়ের জন্য দরকার ছিল ২২ রান।আর এই বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাহুল না থাকা সত্ত্বেও নায়ক হয়ে ওঠেন দীপক হুডা।
কুন্টারনাইল এবং বোল্টের বলে পরপর দুটি জীবনদানও পান তিনি। কিন্তু মূলত তার ২৩ রানের ক্যামিওর দৌলতেই এই কঠিন ম্যাচে মরশুমের দ্বিতীয় সুপারওভারে পৌঁছে যায় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।
মুম্বাইয়ের হয়ে সুপার ওভারে বোলিং করতে এসে দ্বিতীয় বলেই নিকোলাস পুরানকে ফিরিয়ে দেন যশপ্রিত বুমরাহ। ছয় বলে একটিও বাউন্ডারি তো হয়নি উপরন্তু শেষ বলে রাহুলকেও এল বি ডব্লিউ করে সাজঘরে ফেরান তিনি।ফলে জেতার জন্য মুম্বাইয়ের দরকার ছিল মাত্র ৬ রান।
পাঞ্জাবের সুপার ওভারে রাহুলের বাজি ছিলেন মহম্মদ শামি। কিন্তু রোহিত শর্মা এবং কুইন্টন ডিককের সামনে থাকা সত্ত্বেও ৬ রান তাড়া করে জয় তুলে নিতে দেননি তিনি।সেইসব বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন কুইন্টন ডি কক।
ফলে ম্যাচ চলে যায় আরেকটি সুপার ওভারে।দ্বিতীয় সুপার ওভারে মুম্বাইয়ের হয়ে ব্যাট করতে আসেন পোলার্ড এবং হার্দিক। ক্রিস জর্ডনের তৃতীয় বলে সুন্দর বাউন্ডারি তুলে নেন পোলার্ড।চতুর্থ বলে হার্দিক রান আউট হলেও শেষ বলে মায়ানক আগারওয়ালের অসাধারণ ফিল্ডিং এর জেরে দুই রান তুলে নিয়ে পাঞ্জাবের সামনে ১২ রানের টার্গেট রাখে মুম্বাই।
পাঞ্জাবের হয়ে দ্বিতীয় সুপার ওভারে ব্যাট করতে আসেন ক্রিস গেইল এবং আগরওয়াল। ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম বলেই বড় ছয় তুলে নেন ইউনিভার্স বস। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে পরপর দুটি বাউন্ডারি তুলে নিয়ে কঠিন ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল।
এই রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে লীগ টেবিলে মোট ৬ পয়েন্ট হাসিল করলো পাঞ্জাব।