দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ গতকালকের ম্যাচে রাজস্থানের সামনে পরাজিত হবার পর শিলচরে যাবার আসা প্রায় শেষ হয়ে এসেছে চেন্নাই সুপার কিংসের। অনেক চেন্নাই সমর্থকই ভেবেছিলেন কাল মরিয়া লড়াই দেবে আহত সিংহ। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হয়নি। আবুধাবির স্লো পিচে প্রথমে ব্যাট করে রাজস্থানের বোলিংয়ের সামনে মাত্র ১২৫ রানে শেষ হয়ে যায় চেন্নাইয়ের ইনিংস। মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং রবীন্দ্র জাদেজা শেষ অবধি কিছুটা সম্মান বাঁচানোর চেষ্টা করলেও রান তোলার গতি ছিল ভীষণ মন্থর।
অন্যদিকে শুরুতে তিনটি উইকেটের পতন ঘটলেও জস বাটলারের অপরাজিত ৭০ রানের ইনিংসের দৌলতে ১৫ বল বাকি থাকতেই সহজ জয় তুলে নেয় রাজস্থান। ফলে ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আগে ধারাভাষ্যকারদের মুখোমুখি হতে হয় মাহিকে। ম্যাচের হার সম্বন্ধে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, তরুণদের মধ্যে সেরকম স্পার্ক দেখা যায়নি যেরকমটা আমরা চাইছিলাম। যা আজকের ম্যাচে পরাজয়ের একটি বড় কারন।
আরও পড়ুনঃ আইপিএলে ম্যাচ চলাকালীন ধূমপান ব্যাঙ্গালোর তারকার, ক্যামেরা বন্দী বিতর্কিত দৃশ্য
চেন্নাই অধিনায়কের এই মন্তব্য নিয়ে খুশি নন অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞই। ক্রিকবাজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুরুলি কার্তিকের মত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ বলেন, ধোনির এই মন্তব্যের অর্থ আমি বুঝতে পারছি না। সিএসকে দলকে তো এমনিই ‘ড্যাডস আর্মি’ বলা হয়। সেখানে তরুণ আছেনই বা কজন। আর যারা আছেন তারাও কেউ তেমনভাবে ধারাবাহিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি।
মাহির এহেন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ভারতের অন্যতম বিশ্বকাপজয়ী তারকা ওপেনার কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তও।স্টার স্পোর্টস তামিলকে শ্রীকান্ত বলেন যে ধোনি নিশ্চিত ভাবেই মহান ক্রিকেটার কিন্তু তাঁর কথা মানা যায় না। বারবার ধোনি প্রক্রিয়ার উপরে জোর দেবার কথা বলছেন, কিন্তু দল নির্বাচনের প্রক্রিয়াই তো ভুল। কেন বারবার ব্যর্থ হবার পরেও পীযূষ চাওলা এবং কেদার যাদবকে খেলানো হচ্ছে? কেদার যাদবের মধ্যে কি স্পার্ক ছিল?


আটটি ম্যাচে সুযোগ পেয়ে কেদার যাদব করেছেন মাত্র ৬২ রান। এবারের আইপিএলে বোলিং করতেও দেখা যায়নি তাকে। অন্যদিকে নারায়ন জগদীশন একটি ম্যাচের সুযোগ পেয়েই ২৮ বলে ৩৩ রানের দায়িত্ববান ইনিংস উপহার দেন। কিন্তু পরের ম্যাচে আর সুযোগ পাননি তিনি। আর এই কারনেই ধোনির কথাকে সম্পূর্ণ অবান্তর বলে অভিযোগ তোলেন শ্রীকান্ত। তিনি এও বলেন এভাবে চলতে থাকলে চেন্নাই টুর্নামেন্ট থেকে বেরিয়ে যাবে।
কার্যত শেষ চারে পৌঁছানোর আশা এবারের মত শেষ হয়ে গেছে চেন্নাইয়ের।এই মরশুমে দশটি ম্যাচ খেলে মাত্র তিনটি ম্যাচই জিততে পেরেছে তারা। তাই মাহি এখন বেশি করে সুযোগ দিতে চান বেঞ্চে বসে থাকা তরুণদের। সে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আগামীতে চেন্নাই দলে আরও বেশি তরুণদের দেখা যাবে। এরপর তারা চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারবে।


রাজস্থানের বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ের রণনীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে পিচ কিন্তু ততটা খারাপ ছিল না যতটা খারাপ খেলেছে চেন্নাই। পিচে গ্রিপ ছিল না একথা মেনে নেওয়া যায় না। তাছাড়া পাওয়ার প্লের মধ্যে তিন তিনটি উইকেট তুলে নেবার পরেও ম্যাচে চালকের আসনে বসতে পারেনি চেন্নাই। চাওলা কেউ বল করতে আনা হয়েছে একপ্রকার মূল খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে। শ্রীকান্ত এবং মুরুলি কার্তিকের মত অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকই ক্ষুব্ধ চেন্নাইয়ের এই রণনীতিতে।
আগামী চার ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে সমর্থকদের মনোবল কিছুটা বাড়াতে পারেন কিনা মাহি সেটাই এখন দেখার।