দ্য কলকাতা মিরর ব্যুরো টেস্ট ক্রিকেটে প্রতিটা উইকেট নিতে গেলেই যেখানে প্রয়োজন প্রচুর ধৈর্য, নিষ্ঠা এবং নিয়ন্ত্রণ, সেখানে 500 উইকেট চাট্টি খানি কথা নয়। জোরে বোলারদের জন্য তো কাজটা আরোও কঠিন। গতি, ছন্দ এবং ফিটনেস ধরে রাখতে হয় প্রতি নিয়ত। আর এই কাজটা যে কত টা কঠিন তার প্রমান এর থেকেই পাওয়া যায় জন্ম লগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত মাত্র চার জনই এই কীর্তি গড়তে পেরেছেন। ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রড হলেন সেই তালিকায় নবীনতম সংযোজন।
কেরিয়ারের গোড়ার দিকেই যুবরাজ সিংহের কাছে ছয় বলে ছয় ছক্কা খেয়ে কেরিয়ারই শেষ হতে বসেছিলো যার, সেই ব্রড মনে করেন বিশ্ব ক্রিকেটের ক্যালেন্ডারের কারণে তিনিই হতে পারেন ৫০০ উইকেট নেওয়া শেষ পেস বোলার।মঙ্গলবার ম্যানচেস্টারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনে ইতিহাসের সপ্তম বোলার হিসেবে 500 উইকেটের ক্লাবে প্রবেশ করেন ব্রড। এই রেকর্ড গড়তে ব্রডকে খেলতে হয়েছে 140টি টেস্ট।
তিন ম্যাচের সিরিজে এই ডান হাতি বোলার দুটি টেস্ট খেলে ঝুলিতে ভরেছেন 16 উইকেট, সিরিজের সেরা খেলয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে যেখানে বেশির ভাগ ক্রিকেটারই টি-20 আর ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে মূখ ফেরাচ্ছেন টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি, সেখানে 2016 থেকে ব্রডের ধ্যান জ্ঞান শুধুই লাল বল।
34-বছর বয়সী ব্রড মনে করেন, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এতগুলো টেস্ট খেলা একজন পেসারের পক্ষে কঠিন। তিনি বলেন, ‘500 উইকেট নিতে একজন বোলারকে অনেক টেস্ট ক্রিকেট খেলতে হবে। কিন্তু ক্রিকেট খেলা অনেক বেড়ে গেছে দেশের হয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের পাশাপাশি বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লীগতো আছেই। আমি মনে করি, অনেকেই আছে যাদের এটা করার সামর্থ্য আছে কিন্তু তারা এতগুলো টেস্ট খেলতে পারে কি না সেটাই দেখার বিষয়।’
ব্রডের যুক্তি ফেলে দেয়ার মতো নয়। কোর্টনি ওয়ালশ-গ্লেন ম্যাকগ্রার পর 500 উইকেট ক্লাবে প্রবেশ করেন ব্রডের সতীর্থ জেমস অ্যান্ডারসন। সামর্থ্য বিচারে অ্যান্ডারসনের পরেই তালিকায় দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ডেল স্টেইনের নাম আসার কথা। 94 টেস্টে 439 উইকেট নিয়ে গত বছরের আগস্টেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান স্টেইন। কাঁধের চোটই স্টেইনের টেস্ট ছাড়ার বড় কারণ।
বর্তমান সময়ের পেসারদের মধ্যে সর্বাধিক 297 উইকেট শিকার ভারতের ইশান্ত শর্মার। নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি 284 ও ট্রেন্ট বোল্ট 267 উইকেট নিয়েছেন। তিনজনেরই বয়স তিরিশের বেশি। 400’র ক্লাবে প্রবেশ করাটাও চ্যালেঞ্জিং তাদের পক্ষে। তবে স্পিনারদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়ন অষ্টম বোলার হিসেবে মুরালিধরন-অ্যান্ডারসনদের তালিকায় নাম তুলতে পারেন। 96 টেস্টে 390 উইকেট নিয়েছেন এই অফস্পিনার।
টেস্টে পেসারদের মধ্যে সর্বাধিক 589 উইকেট শিকার অ্যান্ডারসনের। 153 টেস্ট খেলা এই পেসার এখনো ফিট। বলেছেন, আরো কিছুদিন খেলবেন। ব্রডও এই সিরিজে জানান দিলেন সহসা থামছেন না তিনিও। ব্রড কি পারবেন তার সতীর্থকে ছাড়িয়ে যেতে? সম্ভাবনা অবশ্য উড়িয়ে দেননি তিনি, ‘অ্যান্ডারসনের মতো হতে চেষ্টা করবো না কেন? তার সঙ্গে খেলতে পারাটা দারুণ।’ আর অ্যান্ডারসনও বলেছেন, তার রেকর্ড ভাঙার সামর্থ্য আছে ব্রডের।