আইপিএলে কোহলীর দলের ১১ কোটি টাকার বোলারই এশিয়া কাপ জেতালেন শ্রীলঙ্কাকে
আট বছর পরে এশিয়া সেরা শ্রীলঙ্কা, ফাইনালে হার বাবর, রিজওয়ানদের পাকিস্তানের
দেশের প্রবল আর্থিক সঙ্কটেও ঘুরে দাঁড়ানো শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে রয়েছে ভারতের ‘অবদান’
দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গ। আইপিএলে লঙ্কার ঝাঁঝাল বোলারের শিকার ২৬ উইকেট। বিরাট কোহলীর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সেই বোলারই এশিয়া কাপ জিতিয়ে দিলেন শ্রীলঙ্কাকে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১৭১ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান ১৬ ওভারে ১১০ রান ৪ উইকেটে। জিততে গেলে ২৪ বলে দরকার ৬১। ক্রিজে থিতু মহম্মদ রিজওয়ান। এমতাবস্থায় নিজের শেষ ওভার বল করতে এসেই বাজিমাত হাসরঙ্গের। আইপিএলের ১০.৭৫ কোটি টাকার বোলারের একটি ওভার বদলে দিল ম্যাচের রং। প্রথম বলে দানুষ্কা গুণতিলকার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন রিজওয়ান। তৃতীয় বলেই হাসরঙ্গের গুগলিতে আছড়ে পড়ল আসিফ আলির মিডল স্টাম্প। পঞ্চম বলে খুশদিল শাহ স্লগ করতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ তুলে দিলেন। এক ওভারের হাসরঙ্গের তিন উইকেট পাকিস্তানের যাবতীয় আশা শেষ করে দিল।
এশিয়ার ক্রিকেটের মসনদে শ্রীলঙ্কা। দুবাইয়ে ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে ষষ্ঠ বার এশিয়া কাপ জিতল। ফাইনালের টসে জিতে বাবর ব্যাট করতে পাঠান শ্রীলঙ্কাকে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভানুকা রাজাপক্ষের ৪৫ বলে ৭১ রান করে অপরাজিত অর্ধশতরানের ইনিংস অনেকটাই ভরসা দেয় শ্রীলঙ্কাকে। হারসঙ্গ ৩৬ রান করে আউট হন। শূন্য রানে আউট হন কুশল মেন্ডিস। রান পাননি পাথুম নিসঙ্ক, দানুষ্ক গুণতিলকাও। ২৮ রান করে আউট হয়ে যান ডি’সিলভা। শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হয় ১৭০ রানে। মদুশন এক ওভারে দুই ও হাসরঙ্গ এক ওভারে তিন উইকেট নেন। জবাবে পাকিস্তানের বিপক্ষে একের পর এক ওয়াইড এবং নো করে কোনও বল না করেই ৯ রান দিয়ে দেন মদুশঙ্ক। তৃতীয় ওভারে বাবর আজম ও ফখর জামানকে আউট করেন প্রমোদ মদুশন। বাবর পাঁচ রান ও ফখর করেন শূন্য রান। এরপর জুটি বাঁধেন মহম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিকার আহমেদ। মদুশনের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ৩২ রানের মাথায় আউট হন ইফতিকার। ৫৫ রানের মাথায় হাসরঙ্গকে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন রিজওয়ান। ১৪৭ রানে শেষ পাকিস্তানের ইনিংস। শ্রীলঙ্কার হয়ে মদুশন চার ও হাসরঙ্গ তিন উইকেট নেন।
রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সঙ্কটে আকাশ ছোঁয়া দ্রব্যমূল্যে নাভিশ্বাসে দমবন্ধ পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার। রাজকোষে টান, সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টায় সরকার। সাধারণ মানুষ একটু স্বস্তির আশায়। অনিশ্চয়তা, আশঙ্কা, অন্ধকার ভবিষ্যতের মাঝেও ক্রিকেটেই সুখ পেলেন দেশের মানুষ! সুখের নেপথ্যে রয়েছে ভারতের অবদান! অর্থ সঙ্কটে থাকা শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডকে সাহায্য করতে সাদা বলের সিরিজ খেলেছিল ভারত। দ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়েও সমাজসেবামূলক মানসিকতা প্রকাশ করেছিল বিসিসিআই অর্থাৎ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এশিয়া কাপ ফাইনালে জেতার জন্য শ্রীলঙ্কার শুভেচ্ছা নেপথ্যে থাকা ভারতীয় ক্রিকেটকেও।