দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: সম্প্রতি মহম্মদ সামী নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে একটি ছবি শেয়ার করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে তিনি উপুড় হয়ে শুয়ে আছেন আর তাঁর পিঠের ওপরে অনেকগুলি কাঁচের কাপ দেওয়া আছে। সেগুলো যেখানে যেখানে দেওয়া হয়েছিল সেখানে লাল হয়ে ফুলে দাগ হয়ে আছে। কিন্তু কী এই কাপ থেরাপি আর কেনই বা এই বিখ্যাত বাঙালি পেসারের তার প্রয়োজনই বা পড়ল?
আসলে কাপিং থেরাপি বিকল্প ঔষধের একটি প্রাচীন রূপ যেখানে একজন থেরাপিস্ট সাকশন তৈরি করতে কয়েক মিনিটের জন্য থেরাপি নেওয়া ব্যক্তির ত্বকে বিশেষ কাপ রাখেন। মানুষ এটা অনেক উদ্দেশ্যে নেয়, যার মধ্যে রয়েছে ব্যথা, প্রদাহ, রক্ত প্রবাহ, শিথিলতা এবং সুস্থতা, এবং এটি এক ধরনের গভীর-টিস্যু ম্যাসেজও বটে।
এই কাপগুলো অনেক উপায়ে তৈরি হয়, যেমন কাঁচ, বাঁশ, মাটির পাত্র, সিলিকনের কাপ। কাপিং থেরাপি এখন প্রচলিত হলেও এটা খুবই প্রাচীন একটি চিকিত্সা পদ্ধতি। এটি প্রাচীন মিশরীয়, চীনা এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংস্কৃতিতে দীর্ঘ সময় ধরে দেখা গিয়েছে। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন চিকিৎসা গ্রন্থ এবার্স প্যাপিরাস বর্ণনা করেছেন কিভাবে প্রাচীন মিশরীয়রা খ্রিস্টপূর্ব ১৫৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কাপিং থেরাপি ব্যবহার করত।
কাপিং এর বিভিন্ন পদ্ধতি আছে, যার মধ্যে রয়েছে: শুষ্ক আর ভেজা। এই উভয় ধরনের কাপিং এর সময়, আপনার থেরাপিস্ট একটি পাত্রে অ্যালকোহল, ভেষজ বা কাগজের মত দাহ্য পদার্থ রাখবেন এবং তাতে আগুন ধরিয়ে দেবেন। আগুন বের হতেই সে কাপটা থেরাপি নেওয়া মানুষের চামড়ার উপর রেখে দেয়।
যখন কাপের ভেতরের আগুন সম্পুর্ণ হাওয়াটা নিয়ে জ্বলে যায় তখন এটি একটি শূন্যতা সৃষ্টি করে। এর ফলে কাপ মাংস সহ রক্তনালীকে প্রসারিত করে যার ফলে ব্যক্তির ত্বক জেগে ওঠে এবং লাল হয়ে যায়। এক একটি কাপ সাধারণত ৩ মিনিট পর্যন্ত রাখা হয়।
তবে মহম্মদ সামী যে কাপিং পদ্ধত ব্যবহার করেছেন সেটা আরও আধুনিক সংস্করণ। এখানে কাপের ভিতরে শূন্যতা তৈরি করতে আগুনের পরিবর্তে একটি রাবার পাম্প ব্যবহার হয়েছে। প্রতি সেশনে আপনি ৩-৫ কাপ দেওয়া হয়। তবে এখানে বোঝা যাচ্ছে যে সামী অনেক গুলি সেশন আগেও নিয়েছেন যে কারণে তাঁর শরীরের ওপরে ছোট বড় মিলিয়ে ১৪-১৫ টি কাপ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
তবে কাপিং করার পর সেখানে সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য এন্টিবায়োটিক মলম এবং ব্যান্ডেজ দেওয়া যেতে পারে। ১০ দিনের মধ্যে ওই ত্বক আবার স্বাভাবিক দেখায়। কাপিং থেরাপি সমর্থকরা বিশ্বাস করেন যে ভেজা কাপিং নিরাময়ের জন্য শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ এবং টক্সিন অপসারণ করে। কিন্তু যদিও এটা প্রমাণিত হয়নি।


বর্তমানে মহম্মদ সামী দুবাইয়ে আছেন। তিনি এই মূহুর্তে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব এর হয়ে খেলছেন। ইতিমধ্যেই তাঁর শর্ট বল দর্শকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই মরশুমে এখনো অবধি তিনি ৪ টি ম্যাচে মাত্র ২ রান দিয়ে ৮ টি উইকেট নিয়েছেন। বলা যেতে পারে এবারের আইপিএলে তাঁর এখনো অবধি পরিসংখ্যান যথেষ্ট নজরকাড়া। নিজেকে ফিট রাখতেই এই কাপ থেরাপি নিচ্ছেন বলেই মনে করছে অনুরাগীরা।