দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আবুধাবিতে আইপিএলের মহারণে আজ মুখোমুখি হয় মুম্বাই এবং রাজস্থান। হাড্ডাহাড্ডি এই লড়াইয়ে টসে জিতে আজ প্রথম ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এর আগেও বহুবার জোফরা আর্চার সাজঘরে ফিরিয়েছেন রোহিতকে, তাই এই মোকাবিলা কতটা রোমাঞ্চকর হয় সেটাই ছিল দেখার।
কিন্তু প্রথম ওভার থেকেই আজ তৈরি ছিলেন হিটম্যান। তরুণ অঙ্কিত রাজপুতকে প্রথম থেকেই একের পর বড় শটে চাপে ফেলে দেন তিনি। অন্যদিকে ভাল সঙ্গত দেন ডিককও। জোফরা আর্চারের প্রথম ওভারেই স্কোয়ার লেগের ওপর পরপর একটি চার ও একটি বিশাল ছয় মারেন তিনি।
কিন্তু ম্যাচের অভিমুখ বদলে দেন পঞ্চম ওভারে বল করতে আসা তরুণ কার্তিক তিয়াগী।ওভারের দ্বিতীয় বলে রোহিতের হাতে একটি দুরন্ত ছয় হজম করার পরেও দমে যাননি তিনি। তার অনবদ্য বাউন্সারে মাত্র ২৩ রানেই ফিরতে হয় মারমুখী কুইন্টন ডিকককে। দলের স্কোর তখন ৪.৫ ওভার শেষে ১ উইকেটের বিনিময়ে ৪৯ রান।
গতদিন দুরন্ত টাচে থাকা সূর্যকুমার যাদবও আজ ভালো শুরু করেন, টম ক্যুরানের বলে দুরন্ত বাউন্ডারি মেরে রোহিতের উপর থেকে চাপ কমানোর চেষ্টা করেন তিনি। অন্যদিকে আজ মেজাজে ছিলেন হিটম্যানও। ফর্মের সাথে যুঝতে থাকা শ্রেয়স গোপালের ওপর আজ আক্রমণ শানান তিনি। মাঝ পিচে পড়া গোপালের বলকে সীমানার বাইরে পাঠিয়ে তিনি বুঝিয়ে দেন সামান্য ভুলেরও আজ কোন ক্ষমা নেই।অন্যদিকে সূর্যকুমারও আজ ছিলেন দৃঢ়সংকল্প। পরপর তিনটি চার মেরে তিনি আক্রমণ শানান তরুণ কার্তিক তিয়াগীর ওপর।
কিন্তু দশম ওভারে বল করতে এসে ম্যাচের গতিপথ আবার বদলে শ্রেয়স গোপাল। পরপর অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং ঈশান কিশানকে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন তিনি।আউট হবার আগে অবধি মাত্র ২৩ বলে ২টি চার ও ৩টি ছয়ের সাহায্যে ৩৫ রানের মারমুখী ইনিংস উপহার দেন তিনি। কিন্তু পরপর দুটি উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যায় মুম্বাই। যদিও একদিকে তখনও ভালো ফর্মে ব্যাট করছিলেন সূর্যকুমার যাদব। কিন্তু পরপর উইকেট হারানোর ফলে কিছুটা মন্থরতা নেমে আসে রান তোলার গতিতে। অপরপক্ষে লেগস্পিনার রাহুল তেওয়াটিয়ে বোলিংয়ে এনে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করে রাজস্থান।
আরও পড়ুনঃ ভুবনেশ্বর কুমারের যায়গায় হায়দ্রাবাদের নতুন বাঁ-হাতি পেসার পৃথ্বী রাজ ইয়ারা
কিন্তু সূর্য কুমার যাদব আজ ধৈর্য হারাননি। দ্বাদশ ওভারে বল করতে আসা গোপালকে পরপর দুটি চার মেরে রান তোলার গতি বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেন তিনি। নির্ধারিত ৪ ওভারে মাত্র ২৮ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নিয়ে নিজের দুরন্ত স্পেল শেষ করেন গোপাল। রাহুলের বলে দুরন্ত ওভার বাউন্ডারি মেরেখোলস ছেড়ে বেড়োনোর চেষ্টা করেন ক্রুণাল পান্ডেও। মুম্বাইয়ের দলগত স্কোর তখন ১৩ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান।
এই রোলার-কোস্টার ম্যাচে ১৪ তম ওভারে আবার অভিমুখ বদলে দেন রাজস্থান তারকা জোফরা আর্চার। ওভারের শেষ বলে মাত্র ১২ রানে ক্রুণালকে ফিরিয়ে দেন তিনি। ফলে বড় স্কোর খাড়া করার সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়ে হার্দিক পান্ডে এবং সূর্যকুমার যাদবের কাঁধে।
১৬ তম ওভারে টম ক্যুরানের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে মাত্র ৩৩ বলে ৮টি চারের সাহায্যে এই মরশুমে নিজের প্রথম অর্ধশত রান পূর্ন করেন সূর্যকুমার।বড় রান তোলার লক্ষ্যে ক্যুরানের ১৮ তম ওভারটিকে টার্গেট করেন তারা। হার্দিক একবার জীবনদান পেলেও ২টি চার ও ১টি ছয়ের সাহায্যে এই ওভারে মোট ১৯ রান তোলে মুম্বাই।আজ যাদবকে সামলাতে পারেননি আর্চারও হেলমেটে আঘাত পাবার পরেই যেভাবে স্কুপ শটে আর্চারকে মাঠের বাইরে পাঠান তিনি তা ছিল অনবদ্য।অঙ্কিত রাজপুতের শেষ ওভার থেকেও ১৭ রান তোলে মুম্বাই। মাত্র ৪৭ বলে ১১ টি চার ও ২ টি ছয়ের সাহায্যে ৭৯ রানের দুরন্ত ইনিংস উপহার দেন সূর্য কুমার যাদব।মাত্র ১৯ বলে ৩০ রান করেন হার্দিক।
যাদব-হার্দিক জুটির এই অসাধারণ ব্যাটিংয়ের দৌলতেই রানের বিশাল ১৯৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা খাড়া করে মুম্বাই। আবুধাবির মাঠে এই বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করা মোটেই সহজ হবে না স্টিভ স্মিথদের পক্ষে। যদিও ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা তবুও প্যাটিনসন, বোল্ট এবং বুমরাহদের সামনে এই রান তাড়া করতে গেলে যে পরপর মিরাকেল ঘটাতে হবে রাজস্থানকে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।