দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আবুধাবিতে আইপিএলের মহারণে আজ মুখোমুখি হয় মুম্বাই এবং রাজস্থান। হাড্ডাহাড্ডি এই লড়াইয়ে টসে জিতে আজ প্রথম ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। মাত্র ৪৭ বলে ১১ টি চার ও ২ টি ছয়ের সাহায্যে ৭৯ রানের দুরন্ত ইনিংস উপহার দেন সূর্য কুমার যাদব,১৯ বলে ৩০ রান করেন হার্দিক এবং ওপেনিংয়ে সে সুন্দর ৩৫ রানের ইনিংস উপহার দেন রোহিতও। এই অসাধারণ ব্যাটিংয়ের দৌলতেই বিশাল ১৯৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা খাড়া করে মুম্বাই।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই উইকেট হারাতে থাকে রাজস্থান। তরুণ যশস্বী জয়সওয়ালকে প্রথম ওভারেই ফেরত পাঠান ট্রেন্ট বোল্ট। দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ৬ রানে বুমরাহ ফেরত পাঠান অধিনায়ক স্টিভ স্মিথকে। ম্যাচের তৃতীয় ওভারে বোল্টের বলে রোহিতের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় রাজস্থানের অন্যতম নায়ক সঞ্জু স্যামসনকেও।অবশ্যই তারিফ করতে হবে অধিনায়ক রোহিত শর্মারও। রাজস্থানের মুখ্য ব্যাটসম্যানদের সামনে দ্বিতীয় ওভারেই যেভাবে বুমরাহকে বোলিংয়ে আনেন তিনি তা সত্যিই অনবদ্য। কারণ এর আগে এই মরশুমে নতুন বলে বুমরাহকে বল করতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে চাপ বাড়তেই থাকে রাজস্থানের ওপর।
পরপর তিন উইকেট হারানোর ফলে আজ তাদের একমাত্র ভরসা ছিলেন ইংল্যান্ডের তারকা ব্যাটসম্যান জস বাটলার এবং তার সঙ্গ দিতে ক্রীজে আসেন গত ম্যাচের ট্রাজিক নায়ক মহিপাল লোমরোর।সাবধানী হাতে শুরু করে মূলত একটা পার্টনারশিপ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেন তারা। মরশুমে প্রথমবার আজ ভালো টাচে ছিলেন বাটলার। বোল্ট,প্যাটিনসন এবং বুমরাহের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের সামনেও কপিবুক শটে আজ একের পর এক বাউন্ডারি তুলে নেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ সূর্য কুমারের ব্যাটের ঝড়ে ১৯৪ রানের বিশাল টার্গেটের সামনে রাজস্থান
কিন্তু নবম ওভারে মাত্র ১১ রানে রাহুল চাহারের বলে অনুকুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মহিপাল লোমরোরও।রাজস্থানের দলগত স্কোর তখন ৪ উইকেটের বিনিময়ে ৪২।তবে আজ ধৈর্য হারাননি বাটলার। একই ওভারে চাহারের বলে ১টি দুরন্ত ওভার বাউন্ডারি মেরে তাকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেবার চেষ্টা করেন তিনি। পরের ওভারে ক্রুনাল পান্ডের বলেও আরেকটি বড় ছয় তুলে নেন বাটলার।মাত্র ৩৪ বলে তিনটি ছয় তিনটি চারের সাহায্যে নিজের অর্ধশত রান পূর্ণ করেন তিনি। বিশেষ করে তিনি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন ক্রুণাল পান্ডের বিরুদ্ধে। দ্বাদশ ওভারের প্রথম বলেই কাউ কর্নারের উপর খেলা টেনিস শটে নিজের চতুর্থ ছয়টি তুলে নেন তিনি। কিরন পোলার্ডের মতো অভিজ্ঞ বোলারও আজ তার হাত থেকে রেহাই পাননি। তার প্রথম ওভারেই একটি দুরন্ত ছয় এবং একটি উস্তাদি চার মেরে ম্যাচের অভিমুখ বদলে দেবার চেষ্টা করেন বাটলার।
কিন্তু ১৪ তম ওভারে প্যাটিনসনের বলে কিরন পোলার্ডের অসাধারণ ফিল্ডিংয়ের সৌজন্যে মাত্র ৪৩ বলে ৪টি চার ও ৫টি ছয় দিয়ে সাজানো ৭০ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে ফিরে যেতে হয় জস বাটলারকে। ফলত সমস্যা আরও জটিল হয়ে যায় রাজস্থানের জন্য। পরের ওভারে পোলার্ড নিজেই ফিরিয়ে দেন অলরাউন্ডার টম ক্যুরানকে। ফলত রাজস্থানের দলগত স্কোর দাঁড়ায় ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১১৩ রান।আর ম্যাচ শেষ হবার পাঁচ ওভার আগেই বাতাসে জয়ের সুগন্ধ পেতে শুরু করে মুম্বাই।
ষোলতম ওভারে বোলিংয়ে ফিরেই রাজস্থানের শেষ প্রতিরোধ রাহুল তেওয়াটিয়াকে দুর্দান্ত ইয়ার্কারে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান যশপ্রিত বুমরাহ।একই ওভারে উইকেট কিপার ডিককের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান শ্রেয়স গোপালও।
রাজস্থানের হয়ে জোফরা আর্চার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও নিজের স্পেলের শেষ ওভারে তাকে ফিরিয়ে দেন বুমরাহ। আজ মুম্বাইয়ের হয়ে নির্ধারিত ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট তুলে নেন তিনি।ইনিংসের ১৯তম ওভারে অঙ্কিত রাজপুতকে ফিরিয়ে দিয়ে রাজস্থানের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন প্যাটিনসন। ১৮.১ ওভারে মাত্র ১৩৬ রানেই শেষ হয়ে যায় রাজস্থানের ইনিংস।
৫৭ রানের এই সহজ জয়ের ফলে ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করে লীগ টেবিলের শীর্ষে উঠে এলো মুম্বাই। অন্যদিকে এই বড় হারের ফলে রাজস্থান নেমে গেল লীগ টেবিলের সপ্তম স্থানে।