দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ শারজার মাঠে আইপিএলের মহারণে আজ মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতা এবং ব্যাঙ্গালোর। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ব্যাঙ্গালোর অধিনায়ক বিরাট কোহলি। শাজারর ব্যাটিং প্যারাডাইসে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করেই সুন্দর শুরু করেছিল ব্যাঙ্গালোর। আরো একবার ব্যাঙ্গালোরের হয়ে ভালো শুরুয়াত দেন তরুণ দেবদূত এবং ফিঞ্চ। মাত্র ২৩ বলে ৩২ রানে সুন্দর ইনিংস উপহার দেন দেবদূত।
আন্দ্রে রাসেলের বলে বোল্ড হবার আগে অবধি অ্যারন ফিঞ্চের সাথে ৬৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুলেছিলেন তিনি। অপরপক্ষে অ্যারন ফিঞ্চ আজও ছিলেন স্বকীয় ভঙ্গিমায়। মাত্র ৩৭ বলে ৪টি চার ও ১টি ছয় সহযোগে ৪৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি। কিন্তু অর্ধশত রান পূর্ণ করার আগেই তাকে সাজঘরে ফেরান প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা।
আজকের ম্যাচে অবশ্য সকলের মন জয় করে নেন এ বি ডিভিলিয়ার্স। মাত্র ৩৩ বলে ৬ টি ছয় ও ৫টি চারের সাহায্যে ৭৩ রানের যে বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি, তা ছিল সত্যিই অনবদ্য। তার আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাননি কলকাতার কোন বোলারই। তরুন নাগরকটি, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, বরুণই হন কিংবা অভিজ্ঞ প্যাট কামিন্স আজ নিজের ইচ্ছামত সকলকেই বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়েছেন তিনি। তার যোগ্য সঙ্গ দেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। যদিও আজ মূলত অ্যাংকারের ইনিংস খেলতেই দেখা যায় তাকে। মাত্র ২৮ বলে একটি চারের সাহায্যে তিনি উপহার দেন ৩৩ রান।
মূলত তাদের এই অসাধারণ ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দৌলতেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রানের বিশাল স্কোর তুলে নেয় ব্যাঙ্গালোর। যদিও শারজা ব্যাটিং প্যারাডাইস কিন্তু রান তাড়া করতে গেলে আজ ভীষণ ভালো ব্যাটিং করতে হতো কলকাতাকে।বিশেষ করে তারকা ব্যাটসম্যান রাসেল এবং মর্গানের বড় ইনিংস খেলা ছিল খুবই জরুরী।
আরও পড়ুনঃ যাদব-ডিককের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে দিল্লি জয় মুম্বাইয়ের
জবাবে ব্যাট করতে নেমে আজ ওপেনিং পার্টনারশিপ প্রথমেই ভেঙে দেন নবদীপ সাইনি। চতুর্থ ওভারে মাত্র ৮ রানে টম ব্যান্টনকে বোল্ড করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। রাহুল ত্রিপাঠী দলে থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে ওপেনিংয়ে পাঠানো হলো না এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। কিন্তু শুভমন গিল আজও ছিলেন একই রকম স্বকীয় ভঙ্গিমায়। পঞ্চম ওভারে মহম্মদ সিরাজের বল একটি দুরন্ত ছয় এবং একটি চার তুলে নিয়ে তিনি বুঝিয়ে দেন বিনা যুদ্ধে আজ মাটি ছাড়তে রাজি নয় কলকাতা।
কিন্তু রানের চাপ প্রকৃতপক্ষে বাড়তেই থাকে ফলতো অষ্টম ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরে যান নীতিশ রানাও। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২৫ বলে ৩টি চার ও ১টি ছয়ের সাহায্যে ৩৪ রানের সুন্দর ইনিংস খেলে রান আউট হয়ে ফিরে যেতে হয় গিলকেও।ফলতো সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়ে মর্গান এবং অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের উপর।
কিন্তু আজ রানরেটের চাপ আর সামলাতে পারেনি দীনেশ কার্তিকও।চাহালের অসাধারণ ঘূর্ণির সামনে মাত্র এক রানেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। পরের ওভারেই ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে কাট করতে গিয়ে উদানার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ইয়ন মর্গান। কার্যত সমস্ত চাপের ফলে এসে পড়ে আন্দ্রে রাসেলের উপর। ব্যাট হাতে এবারের আইপিএলে তেমন ভাবে সফল হতে পারেননি রাসেল।
কিন্তু সাথে ছিলেন ফর্মে থাকা রাহুল ত্রিপাঠী। একবার জীবনদান পাওয়ার পরে ১৪ তম ওভার থেকে ব্যাড ঘোরাতে শুরু করেন মাসেল রাসেলও। ইসুরু উদানার বলে পরপর দুটি বাউন্ডারি এবং একটি ওভার বাউন্ডারি তুলে নেন তিনি। কিন্তু একই ওভারে প্রতিশোধ নেন উদানাও। দারুন স্লোয়ার বলে বড় শট খেলতে গিয়ে মহম্মদ সিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান রাসেল। ১৫ তম ওভারে মরিসের বলে দেবদূতের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন প্যাট কামিন্সও। ফলত: সম্পূর্ণ ম্যাচে একদম একা পড়ে যান রাহুল ত্রিপাঠী এবং বাতাসে জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করে বিরাট কোহলির আরসিবি।
শেষ পর্যন্ত ১৭ তম ওভারে ১৬ রানে রাহুল ত্রিপাঠীকে ফিরিয়ে নাইট রাইডার্সের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন মহম্মদ সিরাজ। ১৯ তম ওভারে মরিচ ফিরিয়ে দেন কামলেশ নাগরকটিকেও। ফলতো নির্ধারিত ২০ ওভারে মাত্র ১১২ রানেই শেষ হয়ে যায় নাইটদের ইনিংস। এই অসাধারণ জয়ের ফলে নিজেদের সাতটি ম্যাচে পাঁচটি জিতে লীগ টেবিলে তৃতীয় স্থানে উঠে এল আরসিবি।