দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আজ আইপিএলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইতে রাজস্থানের বিরুদ্ধে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দিল্লি অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। কিন্তু দুবাইয়ের পিচে শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি দিল্লির জন্য। প্রথম বলেই বোল্ড করে পৃথ্বী শ’কে সাজঘরে ফিরেছিলেন জোফরা আর্চার। গত ম্যাচের মতো একই রকম ব্যর্থ অভিজ্ঞ অজিঙ্কা রাহানেও। দায়িত্বহীন শট খেলে আর্চারের বলে উথাপ্পার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। কিন্তু ইনিংস সামলে নেন শিখর ধাওয়ান এবং অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার।
মাত্র ৩৩ বলে ১৭২ স্ট্রাইকরেটে ছটি চার ও দুটি ছয় দিয়ে বিধ্বংসী ৫৭ রানের ইনিংস সাজিয়ে দেন তিনি। অন্যপ্রান্তে দুটি ছয় এবং তিনটি চার সহযোগে ৪৩ বলে ৫৩ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস উপহার দেন আইয়ার। এক প্রান্তে আজ শিখর যেমন ছিলেন মারমুখী, তেমনি অন্য প্রান্তে সাবধানী হাতে উইকেট সামলে রেখেছিলেন শ্রেয়াস।
মূলত তাদের এই অসাধারণ ব্যাটিংয়ের সুবাদেই শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রানের লক্ষ্যমাত্রা কমছে যায় দিল্লি ক্যাপিটালস। রাজস্থানের হয়ে নির্ধারিত ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করেন জোফরা আর্চার। যদিও এই পিচে টার্গেট হিসেবে ১৬১ রানকে ক্রিকেটীয় ভাষায় পার স্কোর বলা চলে কিন্তু মনে রাখতে হবে দিল্লির কাছে রয়েছে আইপিএলের অন্যতম সেরা শক্তিশালী বোলিং লাইনআপ। তাই রাজস্থানের পক্ষে এই রান তাড়া করা যে মোটেই সহজ ছিলনা তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুনঃ ম্যাচের আগেই বড় ধাক্কা দিল্লিতে, রাজস্থানের মরুঝড় সামলাতে পারবেন কি আইয়ার?
জবাবে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য আজ বেশ বিধ্বংসী মেজাজেই শুরু করে রাজস্থান। ওপেনিংয়ে আরও একবার বেন স্টোকসের উপর ভরসা রাখেন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। মারমুখী ছিলেন জস বাটলারও। শুরু থেকেই এই দুই ব্রিটিশ ব্যাটসম্যানের দাপটে অভিজ্ঞ রাবাডাকেও আজ বেশ দিশেহারা লাগছিল। কিন্তু মার খেলেও তৃতীয় ওভারে জশ বাটলারকে মাত্র ২২ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে নিজের প্রতিশোধ তুলে নেন নকিয়া। অশ্বিনের ঘূর্ণির সামনে ব্যর্থ হন অধিনায়ক স্মিথও।
তবে ভালো মেজাজে খেলা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন বেন স্টোকস। অশ্বিন এবং আক্সারের মত দক্ষ স্পিনারদের যেভাবে একের পর এক সুইপ এবং রিভার্সসুইপ খেলেন তিনি তাতে মনে হচ্ছিল আজ দিল্লির হাত থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে যাবে রাজস্থান। কিন্তু ছটি চারের সাহায্যে ৩৫ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলে তরুণ তুষার দেশপাণ্ডের স্লোয়ার বল বুঝতে না পেরে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।
একটি উইকেট ডেকে আনে আরেকটি উইকেট ক্রিকেটের জনপ্রিয় এই প্রবাদই আজ আরেকবার সত্যি হল আক্সারের বলে ২৫ রান করে স্যামসান ফিরে যাওয়ার ফলে। ভালো শুরু করেও আজও ফিনিশ করতে পারেননি সঞ্জু। তার ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা সম্পর্কে যে অভিযোগ বারবার সামনে আসে আজও তার একটি উদাহরণ পেশ করেন তিনি। একি কথা খাটে রবিন উথাপ্পার ক্ষেত্রেও। মরশুমে প্রথমবার ২৭ বলে ৩২ রানের সুন্দর ইনিংস খেললেও রাজস্থানের হয়ে ম্যাচ ফিনিশ করতে পারেননি তিনি।
১৯ তম ওভারে নকিয়ার বলে বোল্ড হয়ে তিনি সাজঘরে ফিরতেই কার্যত শেষ হয়ে যায় রাজস্থানের দিল্লি জয়ের আশা। মিরাক্কেল ম্যান রাহুল তেওয়াটিয়া ক্রিজে থাকলেও শেষ ছ বলে ২২ রান করে জয় ছিনিয়ে নেওয়া তার পক্ষেও ছিল অসম্ভবের নামান্তর। তবে শেষ ওভারে তরুণ তুষার দেশপান্ডে যেভাবে বোলিং ফিনিশ করেন তার সত্যিই অনবদ্য। তেওয়াটিয়ার মতো মারমুখী ব্যাটসম্যানকেও একের পর এক ইয়র্কারে থামিয়ে রাখেন তিনি। শুধু তাই নয় শেষ বলে তুলে নেন শ্রেয়াস গোপালের উইকেটেও। দিল্লির এই অসাধারণ বোলিংয়ের দৌলতে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে মাত্র ১৪৮ রানেই শেষ হয়ে যায় রাজস্থানের ইনিংস।
১৩ রানের এই জয়ের ফলে লিগ টেবিলে ১২ পয়েন্ট তুলে নিয়ে নিজেদের প্রথম স্থান বজায় রাখল দিল্লি।