32 C
Kolkata
Monday, May 29, 2023
More

    ‌ ইস্টবেঙ্গলের দুই মহিলা ফুটবলার মুগলি, গুরুবারি এখন চাষী!‌ – নির্মলকুমার সাহা

    মুগলি সোরেন ও গুরুবারি মান্ডি। দু’‌জনই ঝাড়গ্রামের মেয়ে। দু’‌জনই এবার মহিলা ফুটবল লিগে ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়। যে লিগ করোনা-‌লকডাউনের জেরে মাঝপথে বন্ধ। মুগলি ডিফেন্ডার, গুরুবারি গোলকিপার। দু’‌জনই এখন আর্থিক অনটনে জেরবার।

    মুগলির বাড়ি সাঁকরাইল থানার নয়াগা গ্রামে। ওর বাবা ধনঞ্জয় সোরেনের বয়স ৭০ পার হয়ে গিয়েছে। মা সালমা সোরেনের বয়স ৬০-‌এর বেশি। একসময় দু’‌জনই দিন মজুরিতে চাষের কাজ করত অন্যের জমিতে। বয়সের কারণে অনেকদিন ধরেই পুরো দিন কাজ করতে পারছিলেন না। পুরো মজুরিও পাচ্ছিলেন না। আর এখন করোনা-‌লকডাউন শুরুর থেকে কাজ প্রায় পুরোই বন্ধ, ভয়ে ক্ষেতে যাচ্ছেন না ধনঞ্জয়-‌সালমা। কিন্তু সংসার টানতে ধানক্ষেতে কাজে যেতে হচ্ছে মুগলিকে। যেদিন কাজ পায়, সকাল ৮টা থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত পরিশ্রম করে হাতে আসে ১৫০ টাকা। 

    গুরুবারির বাড়ি কেশিয়াপাতা গ্রামে। ওর বাবা শুকলাল মান্ডিও দিন মজুর। তবে কাজের কোনও ঠিক নেই। কখনও চাষ করেন। কখনও গাড়ির খালাসির কাজ। কখনও রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে। করোনার জেরে এখন বলতে গেলে কোনও কাজই পাচ্ছেন না। গুরুবারির মা ডুনানি মান্ডি মানসিক ভারসাম্যহীন। ফলে সংসার চালানোর দায় এখন অনেকটাই গুরুবারির। ফুটবল খেলা এখন নেই। সকাল হলে গুরুবারিকেও যেতে হচ্ছে টাকার খোঁজে ক্ষেতে। দৈনিক মজুরি ওই ১৫০ টাকা।

    রোহিনী বালিকা বিদ্যালয়ের ক্লাস ইলেভেনের ছাত্রী মুগলি ২০১৯‌-‌২০-‌তে অরুণাচলে মহিলাদের সিনিয়র জাতীয় ফুটবলে বাংলার হয়ে খেলেছে। ২০১৭ সালে খেলেছে কটকে জুনিয়র ন্যাশনালে। আরও আগে ২০১৬ সালে খেলো ইন্ডিয়ায়। ২০১৪ সালে সুব্রত কাপে খেলেছে কেশিয়াপাতা গোপীনাথ মেমোরিয়াল হাই স্কুলের হয়ে।

    টাকার অভাবে একসময় লেখাপড়া ছেড়ে দিতে হয়েছিল গুরুবারিকে। পরে আবার ভর্তি হয়েছে কেশিয়াপাতা গোপীনাথ মেমোরিয়াল হাই স্কুলে। এখন পড়ে ক্লাস টেনে। ২০১৭ সালে কটকে জুনিয়র ন্যাশনালে বাংলার হয়ে খেলেছে। ওই কটকেই ২০১৮-‌১৯-‌এ খেলেছে সিনিয়র ন্যাশনালেও।

    দু’‌জনেরই ফুটবল খেলা শুরু সাঁকরাইল থানা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির মাঠে অশোক সিংহর কাছে। এখনও যখন গ্রামের বাড়িতে থাকে ওই মাঠেই যায় ফুটবল খেলতে, অনুশীলনে।

    মুগলি ও গুরুবারি দু’‌জনই জানাল, ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে ওদের চুক্তি হয়েছিল ৯ হাজার টাকা করে। সাড়ে ৪ হাজার করে পেয়েছে। বাকিটা পাওয়ার কথা ছিল পরে। কিন্তু লকডাউনের জন্য লিগ বন্ধ, আসতে পারছে না কলকাতায়ও। ফলে বাকি ওই টাকাও নিতে পারছে না। যে টাকা পেলে ওদের সংসার সাময়িকভাবে চলে যেত। ওরা এখন ওই টাকার অপেক্ষায় দিন গুনছে।

    Related Posts

    Comments

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    সেরা পছন্দ

    বাতিল হতে চলেছে ২০০০ টাকার নোট !

    দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : বাজার থেকে ২০০০ টাকার নোট তুলে নিচ্ছে RBI। এমনই বড় সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করল...

    শীঘ্রই আসছে ডেঙ্গু ভ্যাকসিন ! চলছে শেষ পর্যায়ের ট্রায়াল

    দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : বর্ষার মরসুম শুরু হতে আর বেশি দেরি নেই। ফি বছরে বর্ষা মরসুম মানেই ডেঙ্গির...

    কেষ্ট গড়ে তৃণমূলে ধস ! বিজেপিতে যোগ দিল বহু মুসলিম পরিবার

    দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। জোরকদমে প্রচার চালাচ্ছে শাসক-বিরোধী। তার আগে ভাঙন অস্বস্তিতে বিপাকে পড়ছে...

    সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে বেশ কিছু দেশ ! জানুন সেই দেশ গুলি সম্পর্কে

    দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : উষ্ণায়নের কারণে গোটা বিশ্বজুড়ে অনেক সমস্যা দেখা যাচ্ছে। কোনও কোনও জায়গায় গ্রীষ্মকালে তুষারপাত হচ্ছে...

    শুরু থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ , কি আছে বিতর্কিত ছবিতে ?

    দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : ইউটিউবে ছবির ট্রেলার দেখেই বিতর্কের মেঘ ঘনিয়েছিল। মুক্তির পর তোলপাড় ফেলে দিয়েছে পরিচালক সুদীপ্ত...