দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ইস্টবেঙ্গল ক্লাব দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে আইএসএল নিয়ে জট কাটিয়ে উঠেছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী সই করা চুক্তিপত্রও পাঠানো হয়ে গিয়েছে ইনভেস্টরদের কাছে। আর ঠিক এর পরপরই প্রাক্তন লিভারপুল তারকা রবি ফাউলারকে হেড কোচ করে ইস্টবেঙ্গল। ইতিমধ্যে কোচিং স্টাফের টিমও ঘোষণা করে দিয়েছে ক্লাব।
রবি ফাউলার দলের হেড কোচ হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লাল-হলুদকে নিয়ে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা অকপটে জানালেন। যদিও ফুটবলার হিসেবে দুরন্ত পারফরম্যান্স করা রবির ‘কোচিং কেরিয়ারে’ কিন্তু সেরকম বলার মতন কোন সাফল্য নেই। এম়ন অবস্থায় লাল হলুদের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন। সম্মেলনে এসেই কোচ হিসেবে তার ভবিষ্যৎ রুপরেখা স্পষ্ট করলেন।
এই ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের সহকারী কোচ আন্তোনি গ্রান্টও। রবি শুরু করেন এটা বলে যে ‘নতুন দলের নাম এস সি ইস্টবেঙ্গল হলেও এই ক্লাব গত ১০০ বছর ধরে সবার মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। তাই তিনি এবং তাঁর দলের সব ফুটবলাররা মাঠে উপস্থিত সমর্থকদের আবেগের মূল্য দেবেন। সে কারণেই ইস্টবেঙ্গলের কোচ হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিলাম।’
তিনি এও বলেন যে কলকাতা ফুটবল বা ভারতীয় ফুটবল বলতেই সবার প্রথম যে ম্যাচের নামটি সামনে আসে তা হল ইস্ট-মোহন ডার্বি। তাই সম্মেলনে ডার্বি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই ফাউলার বলেন ‘ডার্বি নিয়ে আপনাদের মত আমিও একইরকম উচ্ছ্বসিত। আমাদের দেশেও ডার্বি নিয়ে উন্মাদনা সর্বদা বর্তমান । পৃথিবীর সব ফুটবল খেলা দেশে এই ডার্বি ম্যাচটির দিকে সবাই তাকিয়ে থাকে। আমি ফুটবলার হিসেবেও একাধিক ডার্বি খেলেছি। তাই ডার্বি ম্যাচ নিয়ে অভিজ্ঞতা আছে। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বি নিয়ে অনেক কথা শুনেছি। এই ম্যাচটি তো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ তবে আমার কাছে বাকি সব ম্যাচ সমান গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ লক্ষ সমর্থকদের মুখের হাসি ফোটাতে এই ম্যাচ আমরা অবশ্যই জেতার জন্য খেলব।’
যদিও এর আগে ২০১২ সালেই ফাউলারের ভারতে আসার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে এবার ২০২০ তে কলকাতা আসার আগে একেবারে হোম ওয়ার্ক করেই আসছেন তিনি। তিনি আসার আগে ভারতীয় ফুটবল সম্বন্ধে ডেভিড জেমস, টেডি শেরিংহ্যামের সঙ্গে বিশদে কথা বলেছেন। সেই সাথে এটা পরিষ্কার যে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের প্রত্যাশা সম্পর্কে তিনি যথেষ্টই অবহিত রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নানা কারণে এ বছর ইস্টবেঙ্গলের টিম গঠন সে ভাবে করা যায়নি। আর সে কথা মাথায় রেখেই রবি ফাউলার বলেন ‘আমরা অনেক দেরিতে শুরু করছি। ফলে আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে। বিভিন্ন বিভাগে একাধিক বিশেষজ্ঞ সাপোর্ট স্টাফ নিয়ে আসছি। একটা ভাল দল গড়তে হলে সবার আগে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ সুন্দর রাখতে হবে। দলের সবার মধ্যে বিশ্বাস ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। আমার দলে বিদেশি ও ভারতীয় ফুটবলার, সবাই সমান। ভারতীয় ফুটবলারদের নিয়ে আমি খুবই খুশি। ওরা প্রত্যেকেই অত্যন্ত ভাল। দেশের ও পুরোনো ক্লাবের হয়ে ভাল পারফরম্যান্স করেছে। ভারতীয় ফুটবলারদের সঙ্গে সঠিক মেলবন্ধন করার জন্য রেনেডি সিং তো আছেই। ভারতীয় ফুটবলে রেনেডির রেকর্ড ও অবদান অনবদ্য। আর সেটাই দলে ম্যাজিকের মতো কাজ করবে।’
এক কথায়, রবি ও রেনেডির এই আর স্কয়ার একবার কাজ করে যায় তাহলে যে লাল-হলুদের আগুনে জ্বলবে আইএসএল সে কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না আর সেদিকেই তাকিয়ে আছে লাল-হলুদ শিবির সহ সকল ময়দান প্রেমী মানুষ।