দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ আজ আইপিএলের প্রথম পর্বে মুখোমুখি হয়েছিল রাজস্থান রয়েলস এবং সানরাইজেস হায়দ্রাবাদ। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন হায়দ্রাবাদ ক্যাপ্টেন ডেভিড ওয়ার্নার। শুরুটা ভালো করলেও কার্তিক তিয়াগীর বলে ব্যক্তিগত ১৬ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় জনি বেয়ারস্টোকে।তবে প্রথম ধাক্কা সামলাতে সাবধানী হাতে দলের হাল ধরেন ওয়ার্নার এবং মনীশ পান্ডে। গতম্যাচের মতই আজও ভালো মেজাজে ছিলেন ওয়ার্নার। কঠিন পিচে স্বকীয় ভঙ্গিমায় মাত্র ৩৮ বলে ৩টি চার ২টি ছয়ের সাহায্যে ৪৮ রানের দুরন্ত ইনিংস উপহার দেন তিনি। যদিও রানের গতি দ্রুত করতে গিয়ে জোফরা আর্চারের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যেতে হয় তাকে।
তবে আজ তার যথাযথ সঙ্গ দিয়েছিলেন মনীশ পান্ডেও।সাবধানি হতে শুরু করে প্রতিটা খারাপ বলকে আজ বাউন্ডারি মুখ দেখান তিনি। ৪৪ বলে ৩ টি ছয় ও ২টি চারের সাহায্যে ৫৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি। কিন্তু মোক্ষম সময়ে উনাদকাটের বলে রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে যখন তিনি সাজঘরে ফেরেন বড় স্কোর করার স্বপ্ন অনেকটাই দূরে চলে যায় হায়দ্রাবাদের থেকে। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১২ বলে ২টি বিশাল ছয়ের সাহায্যে ২২ রানের অপূর্ব ক্যামিও খেলে হায়দ্রাবাদ কি কিছুটা ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন কেন উইলিয়ামসন। শেষ বেলায় এই দ্রুতগতিতে রান তোলার কারণেই নির্ধারিত ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান তোলে হায়দ্রাবাদ।
আরও পড়ুনঃ দিল্লির লাড্ডু খেয়ে আজ কি পস্তাবেন রোহিত নাকি আবুধাবিতে মুম্বাই রাজ কায়েম!
দুবাইয়ের এই কঠিন পিচে এই টার্গেট তাড়া করে জয় তুলে নেওয়া মোটেই সহজ ছিল না রাজস্থানের পক্ষে।তার ওপর জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই বেন স্টোকসের উইকেট হারায় রাজস্থান। মাত্র ৫ রানে খলিলের বলে প্লেড অন হয়ে সাজঘরে ফিরে যেতে হয় তাকে। ব্যর্থ হন জস বাটলারও। উইকেট কিপার বেয়ারস্টোর হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হবার আগে অবধি আজ তার সংগ্রহ ছিল মাত্র ১৬ রান।নটরাজন এবং বিজয় শংকরের অসাধারণ ফিল্ডিংয়ের সৌজন্যে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথকেও।ফলতো পঞ্চম ওভারে মাত্র ২৬ রানে মাথাতেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যায় রাজস্থান। এই পর্বে রাজস্থানের একমাত্র ভরসা ছিল সঞ্জু স্যামসান এবং রবি উথাপ্পার উপর। ভালো শুরু করেছিলেন সঞ্জুও। আজ প্রথম তাকে দেখে অনেকটাই নির্ভরশীল মনে হচ্ছিল। কিন্তু রাশিদ খানের দুরন্ত ঘূর্ণির সামনে ভেঙে পড়ে সমস্ত প্রতিরোধ। ১৫ বলে ১৮ রান করে দশম ওভারে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান উথাপ্পা।
ফলে এমনিতেই ক্রিজে একা হয়ে পড়েছিলেন স্যামসান। দ্বাদশ ওভারে রাশিদ খানের বলে কভার ড্রাইভ মারতে গিয়ে জনি বেয়ারস্টো হাতে ক্যাচ আউট হন তিনিও। মাত্র ২৫ বলে ৩টি চারের শাহজাহান তিনি সংগ্রহ করেছিলেন ২৬ রান।সাবধানী হাতে একদিক থেকে ইনিংসটিকে ধরে রাখার চেষ্টাও করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার এই ব্যর্থতার ফলে চাঁদ গিয়ে পড়ে তরুণ রাহুল তেওয়াটিয়া এবং রিয়ান পরাগের ওপর। কিন্তু লক্ষ্য তখনও অনেকটাই দূর এবং সামনে রয়েছে রাশিদ খান, নটরাজন এবং খলিল আহমেদের ত্রিফলা আক্রমণ।
সাবধানি হাতে পার্টনারশিপ গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও রানরেটের চাপ যে স্পষ্টতই কাবু করছিল রাজস্থানকে তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু হাল ছাড়েননি এই দুই তরুণ। খলিল আহমেদ এবং সন্দীপ শর্মার বলে পরপর দুটি বিশাল ছয় তুলে নেন রিয়ান এবং রাহুল। কিন্তু বাকি থাকা ২১ বলে ৪৫ রান তুলে নেওয়া সহজ ছিল না কখনোই।হ্যাপি ওভারে আরও দুটি চার মেরে আক্রমণ জারি রাখেন রিয়ান।
এর ফলে মরা ম্যাচে আবার কিছুটা স্বপ্নে বুক বাঁধতে থাকেন রাজস্থান ফ্যানেরা। পরের ওভারে ওওয়ার্নারের মূল অস্ত্র রাশিদ খানকে সুইচ হিট এবং কভার ড্রাইভে পরপর তিনটি চার মেরে হায়দ্রাবাদকে রীতিমতো ব্যাকফুটে ঠেলে দেন তিনি।
দুজনেরই অসাধারণ ব্যাটিংয়ের দৌলতেই ম্যাচে ফিরে আসে রাজস্থান। ১২ বলে তখন দরকার ২২ রান। কিন্তু আজ আরেকবার মিরাকেল করার মেজাজে ছিলেন রাহুল তেওয়াটিয়া। নটরাজনের অভিজ্ঞ ইয়ার্কারের সামনেও পরপর একটি চার এবং একটি দুরন্ত ছয় তুলে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মাত্র ২৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছয়ের সাহায্যে ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন রাহুল।মাত্র ২৬ বলে ২টি চার ও ২টি ছয়ের সাহায্যে ৪৩ রান করেন রিয়ান।
দুই তরুণের এই অনবদ্য অপরাজিত ইনিংসের সৌজন্যে রোলারকোস্টার ম্যাচে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট তুলে নেয় রাজস্থান।
.