করোনাকালের মাঝেই এখন শারদোৎসব। বি জে পি-তে যোগ দেওয়ার পর জ্যোতির্ময়ী শিকদার ব্যস্ত কখনও মাস্ক, স্যানিটাইজার বিতরণে। আবার কখনও ত্রাণ নিয়ে হাজির অসহায় মানুষের কাছে। আর পুজোর আগে অনেকটা সময় কেটে গেছে বস্ত্র বিতরণে। বৃহস্পতিবার ষষ্ঠীর সারাদিন কেটেছে মন্ডপে মন্ডপে। না, ঠাকুর দেখার জন্য নয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দেবে সেরা পুজোর পুরস্কার। তার নির্বাচক মণ্ডলীতে আছেন তিনি। তাই শহরেরে একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সেরা বাছার দৌড়।


শুক্রবার মানে আজ ও বের হতে হবে ওই একই কাজে। ১৯৯৮-এ ব্যাঙ্কক এশিয়াডে জোড়া সোনাজয়ী জ্যোতির্ময়ী এখন রাজনীতিতে বি জে পি পরিবারে। করোনা-আতঙ্কের মাঝেই সোনার মেয়ে যোগ দিয়েছেন পদ্ম শিবিরে। সেই থেকেই নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন দলের নানা কাজে। করোনার পাশাপাশি আমফানের তাণ্ডবের শিকার হয়েছিলেন অজস্র মানুষ। গোসাবা-সহ বিভিন্ন অঞ্চলে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ত্রাণ বিতরণে ছিলেন জ্যোতির্ময়ী।
সোনাজয়ী জ্যোতির্ময়ী এখন রাজনীতিতে বি জে পি পরিবারে জ্যোতির্ময়ী শিকদার
রাজ্যের আরও কিছু অঞ্চলেও একই ভূমিকায় দেখা যায় তাঁকে। আর ছিল শহর থেকে গ্রাম, মাস্ক-স্যানিটাইজার বিতরণ। কখনও হাজির রক্তদান শিবিরে রক্তদাতাদের উৎসাহ দিতে। এরই মধ্যে চলে আসে বাঙালির সেরা উৎসব। এবার তো মহালয়া ছিল পুজোর এক মাস আগে। তখন থেকেই শুরু হয়ে যায় জ্যোতির্ময়ীর দৌড়। গরীব মানুষের হাতে পুজোর উপহার হিসেবে বস্ত্র তুলে দেওয়া। বি জে পি-র মহিলা মোর্চার উদ্যোগে নদীয়ার চাকদহ বিধান সভার তাতলায় একটি বড় অনুষ্ঠানে একহাজার মহিলার হাতে নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। ওখানেও ছিলেন জ্যোতির্ময়ী। ওই একই দিনে শিমুড়ালির ঘেটুগাছি এলাকাতেও বস্ত্র বিতরণে ছিলেন তিনি। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই দৌড়তে হচ্ছে নানা জায়গায়। সোনার মেয়ে বলছিলেন, ‘আমি সবসমই মানুষের জন্য কাজ করতে ভালবাসি। মানুষের পাশে থাকতে চাই। সেই কাজটা করতে পেরে ভাল লাগছে। আনন্দ পাচ্ছি।’ বি জে পি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকে এভাবেই নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন দলের নানা কাজে। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হন বি জে পি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর আরোগ্য কামনায় বাড়িতে যজ্ঞের আয়োজনও করেছিলেন সোনার মেয়ে।
গরীব মানুষের হাতে পুজোর উপহার হিসেবে বস্ত্র তুলে দেওয়া গোসাবা-সহ বিভিন্ন অঞ্চলে
মা জ্যোতির্ময়ী ও বাবা অবতার সিং, দুজনই ছিলেন অ্যাথলিট। ওঁদের ছেলে অভ্রজ্যোতি কিন্তু মা-বাবার মত অ্যাথলেটিক্সে নেই। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে শুটার হিসেবে। জয়দীপ কর্মকার শুটিং অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থী অভ্রজ্যোতি এরই মধ্যে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে রাজ্য ও পূর্বাঞ্চল চ্যাম্পিয়নশিপে একাধিক সোনা জিতেছে। ছেলের উৎসাহ দেখে মা-বাবা সল্টলেকের বাড়িতেই করে দিয়েছেন শুটিং রেঞ্জ, জিম। করোনা-আতঙ্কে সবার যখন বাইরে যাওয়া বন্ধ, অভ্রজ্যোতির নিজের বাড়ির রেঞ্জে অনুশীলন চালিয়ে যেতে অসুবিধা হয়নি। এখন মা যখন সারাদিন দলের কাজে এখানে ওখানে ছুটছেন, ছেলে নিজেকে ব্যস্ত রাখছে কখনও শুটিং রেঞ্জে, আবার কখনও জিমে।

