সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রেই গ্ল্যামারের পেছনে ছোটার প্রবণতা নতুন কিছু নয়। অনেকেই অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে নিজের পরিচিত জগতের ব্যারিকেড ভেঙে অন্য জগতেও ঢুকে পড়েন। সেটা স্রেফ প্রচারের আশায়। কখনও কখনও সেই অযাচিত প্রবেশটা হাস্যকরও হয়ে দাঁড়ায়। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছেন কেউ কেউ। যেমন একদা ফুটবলার, এখন কবি, গীতিকার, সুরকার, গায়ক ভুবন চ্যাটার্জি। যিনি একসময় ভালই ফুটবল খেলতেন। গোলকিপার ভুবন খেলেছেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের হয়েও।
ফুটবল খেলার সময় থেকেই বাড়তি পছন্দ ছিল লেখালেখি,গান। ফুটবল খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর পুরোপুরি মেতে আছেন সেই গান, লেখালেখি নিয়েই। পাশে আছেন তাঁর স্ত্রী গায়িকা কাকলি চট্টোপাধ্যায়ও। এখনও পর্যন্ত ভুবনের কথায়, সুরে, গানে প্রকাশিত হয়েছে ৩০টি অ্যালবাম। যার মধ্যে শুধু খেলা নিয়েই ১৮টি।
খেলার জগৎ থেকে এসেছেন, হয়ত সেই কারণেই ভুবনের গান বেশি খেলা এবং খেলোয়াড়দের নিয়েই। এখানেই এসে যাচ্ছে লেখার শুরুর সেই গ্ল্যামারের প্রসঙ্গ। খেলা ও খেলোয়াড়দের নিয়ে গান নতুন কিছু নয়। কিন্তু তার বেশিরভাগই দেখা গিয়েছে গ্ল্যামার কেন্দ্রিক। এই জায়গাটায় ভুবন একবারেই ব্যতিক্রম। ভুবনের গানে তাই উঠে আসেন ফুটবলার, ক্রিকেটারের পাশাপাশি আমাদের দেশে কম জনপ্রিয় টেবিল টেনিস, সাঁতার, বক্সিং, অ্যাথলেটিক্সের মতো খেলার তারকারাও। শচীন, সৌরভের পাশাপাশি ভুবনের গানে তাই জায়গা পান অবহেলিত বক্সার কৃষ্ণ রাউথও।


সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে একটি বই। ‘একটি তারার খোঁজে’। লিখেছেন মৌসুমি প্রামাণিক। ময়দানে ভবানীপুর ক্লাব তাঁবুতে বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে ছিলেন অরুণলাল, শান্তি মল্লিক, দিব্যেন্দু বড়ুয়ারা। বইয়ের বিষয় সেই ব্যতিক্রমী ভুবন চ্যাটার্জি। ভুবনের বৈচিত্র্যময় জীবনকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা। রয়েছে ভুবনের ফুটবল-জীবনের কথা। লেখিকা নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছেন ভুবনের সঙ্গীতচর্চার দিক। আছে ভুবনকে নিয়ে একঝাঁক খেলোয়াড়, ক্রীড়া সাংবাদিকের মূল্যায়ন। সবমিলিয়ে ছবি ও লেখায় জমজমাট ‘একটি তারার খোঁজে’। আগে ভুবনের গান, কবিতা নিয়ে একাধিক বই প্রকাশিত হলেও জীবন কাহিনী এই প্রথম। যে বইয়ে, সত্যি অন্য ভুবনকে খুঁজে পাওয়া।