30 C
Kolkata
Saturday, June 10, 2023
More

    লকডাউনে মা-বাবার কাজ নেই, বর্ষায় পায়েলের পাঁপড় তৈরিও বন্ধ! – নির্মলকুমার সাহা

    একবার‌-‌দু’‌বার নয়। বিভিন্ন বয়সভিত্তিক জাতীয় ভলিবল প্রতিযোগিতায় ৮ বার চ্যাম্পিয়ন বাংলা দলের সদস্য পায়েল বিশ্বাস। একবার ছিল রানার্স বাংলা দলে। উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগর তরুণ সঙ্ঘের এই ভলিবলারও আরও অনেকের মতো করোনা-‌লকডাউনে নাজেহাল। আর্থিক সঙ্কটে ওর পরিবার। পায়েলের বাবা গজেন বিশ্বাস রাজমিস্ত্রি। মার্চে লকডাউনের শুরু থেকেই টানা প্রায় আড়াই মাস কোনও কাজ ছিল না। তারপর কখনও আছে, কখনও নেই। পায়েলের কথায়, ‘ওটা কাজ ‌না থাকার মতোই।’‌ পায়েলের মা বিউটি বিশ্বাস কখনও কারও বাড়িতে, কখনও কোনও অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্নার কাজ করতেন। লকডাউন শুরুর দিন থেকে এখনও পর্যন্ত কাজ নেই। ঘরেই বসে আসেন। স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে গজেনের ৬ জনের সংসার। স্বাভাবিক সময়েই সংসার চালাতে হিমশিম। মা-‌বাবার চাপ কমাতে লেখাপড়া, খেলাধুলোর পাশাপাশি কিছু রোজগারের পথ বেছে নিয়েছিল পায়েল। এক কারখানার অর্ডার নিয়ে বাড়িতে পাঁপড় বানাতো। পায়েল বলছিল, ‘‌খেলা, পড়ার পর সময় খুব কম পেতাম। তবু পাঁপড় বানানোর কাজটা শুরু করেছিলাম। তাতে নিজের খরচের কিছুটা উঠে আসত। লকডাউন শুরুর পর ওই কাজটাও অনেকদিন বন্ধ ছিল। পরে শুরু হলেও কয়েকদিন পর থেকে এখন আবার বর্ষার জন্য বন্ধ। কী আর বলব, সংসারের অবস্থা এখন ভীষণ খারাপ! যত দিন যাচ্ছে আরও খারাপ হচ্ছে।‌’‌

    শ্যামনগরের চন্ডীতলার পায়েল বাংলার হয়ে মিনি ন্যাশনালে খেলেছে ২ বার। ২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়ন বাংলার ক্যাপ্টেন ছিল পায়েল। তার আগেরবার বাংলা রানার্স হয়েছিল। সাব জুনিয়র ন্যাশনালে দু’‌বার খেলেছে, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে। দু’‌বারই বাংলা চ্যাম্পিয়ন। শেষ বার পায়েল ছিল ক্যাপ্টেন। জুনিয়র ন্যাশনালেও দু’‌বার চ্যাম্পিয়ন বাংলা দলের হয়ে খেলেছে। যার শেষটা খেলে এসেছে লকডাউন শুরুর আগে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে অন্ধ্রপ্রদেশে। গত বছর পুনেতে খেলো ইন্ডিয়া ইউথ গেমসে (‌অনূর্ধ্ব ১৭)‌ বাংলা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, পায়েলের নেতৃত্বে। জাতীয় স্কুল গেমসে দু’‌বার বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেছে। দু’‌বারই বাংলা চ্যাম্পিয়ন। এই হচ্ছে ১৮ ছুঁই ছুঁই বয়সের পায়েলের একঝলকে সাফল্যের পরিসংখ্যান। পায়েল বলছিল, ওর এই সাফল্যের পেছনে শ্যামনগর তরুণ সঙ্ঘের তিনজন কোচের অবদান রয়েছে। ওঁরা হলেন শঙ্কর নাগ, দীপঙ্কর নাগ ও দেবদাস সাহা। লকডাউনে ক্লাবের অনুশীলন অনেকদিন বন্ধ ছিল। এখন আবার একসঙ্গে নয়, দু-‌চারজন করে আলাদা আলাদা অনুশীলন শুরু করেছে ক্লাবে।

    দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী পায়েল বলল, ‘‌জানি খেলাধুলো চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু বাড়ির যা অবস্থা, এভাবে কতদিন চালাতে পারব, জানি না!‌ ধার-‌দেনা আর ফ্রি রেশনে কতদিন সংসার চলবে, সেটাও বুঝতে পারছি না। সত্যি, আমরা ভালো নেই। অসহায়!‌’‌

    Related Posts

    Comments

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    সেরা পছন্দ

    হেডের দুরন্ত সেঞ্চুরি WTC প্রথম দিনেই চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া।

    দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : হেডের দুরন্ত সেঞ্চুরি প্রথম দিনেই চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে টসে জিতে রোহিত শর্মা ফিল্ডিং...

    কোচ হতে চলেছেন ‘কলকাতার মহারাজ’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

    দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : ১৪ ম্যাচে মাত্র পাঁচটি জয়। ১০ পয়েন্ট নিয়ে নয় নম্বরে শেষ করেছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। তখনই দেওয়াল লিখন...

    ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের শ্রদ্ধা নিবেদন ভারতীয় ক্রিকেট দলের ।

    দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল শুরু হওয়ার আগে ভারতীয় ক্রিকেট দল বালেশ্বরে হওয়া ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ব্যাক্তিদের উদ্দেশে...

    অভিষেকের বিরুদ্ধে পোস্টার খোদ সিঙ্গুরেই ।

    দ্য কালকাটা মিরর ব্যুরো : এবার অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়লো তৃণমূল কংগ্রেসের ভিত্তিভূমি খোদ সিঙ্গুরের । ' চোর ডাকাতের যুবরাজ নট...

    ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রকে তলব কোলকাতা হাইকোর্টের ।

    দ্য কালকাটা মিরর ব্যুরো : ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে কেন্দ্র রাজ্য তরজা লেগেই ছিলো । একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির পর কোলকাতা...