প্রচারে নেই। নীরবে নানারকম সমাজসেবার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন ভারতের প্রাক্তন সাঁতারু সুরজিৎ ঘোষ। করোনার কঠিন পরিস্থিতেও তিনি মানুষের পাশে। এরই মধ্যে আরও একটি বড় কাজে উদ্যোগী হতে হল তাঁকে। একসময় সাঁতার কাটতেন বালির প্রতিমা ঘোষ। রাজ্য প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিয়েছেন। কিন্তু আর্থিক কারণেই বেশি দূর এগোতে পারেননি। সমসাময়িক এবং বালি অঞ্চলের হওয়ায় সুরজিৎ চিনতেন প্রতিমাকে। বিয়ের পর দমদম-বেলঘড়িয়া অঞ্চলে চলে যান প্রতিমা। পুরনো পাড়ায় প্রতিমা এলে কালেভদ্রে দেখা হত। যোগাযোগ বলতে এটুকুই। প্রতিমার (বিয়ের পর পদবি কোলে) শিশুপুত্র প্রীতম কোলে ফুসফুসের কঠিন রোগে আক্রান্ত। আছে শরীরের আরও কিছু সমস্যা। অস্ত্রোপচার দরকার। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অন্ততঃ তিন লাখ টাকা খরচ। প্রীতমের বাবার নিয়মিত কোনও কাজ নেই। প্রতিমা আয়ার কাজ করেন। করোনার ধাক্কায় সেই কাজও অনিয়মিত। কোথায় পাবেন অত টাকা! দিশেহারা প্রতিমা।


করোনাকালেই এটা জানতে পারেন সুরজিৎ। আসলে প্রতিমাই এসেছিলেন সুরজিতের কাছে। যদি কোনও সাহায্য পান। সুরজিৎ নিজে যতটা পেরেছেন, সাহায্য করেছেন। তারপর উদ্যোগ নেন, আরও কিছু টাকা যদি প্রতিমার হাতে তুলে দেওয়া যায়। হয়ত এখনকার কঠিন পরিস্থিতির জন্যই শুরুতে বিশেষ সাড়া পাননি। কিন্তু সুরজিৎ চেষ্টা ছাড়েননি। একসময় সুরজিৎদের সঙ্গেই সাঁতার কাটতেন মুম্বইয়ের মইন সিরাজি। একবার সাফ গেমসে একই সঙ্গে ভারতীয় দলে ছিলেন। তিনি এখন আমেরিকায় থাকেন। অনেকদিন যোগাযোগ ছিল না। ২৮ বছর পর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে হঠাৎই আবার যোগাযোগ। মইনকে ওই সমস্যার কথা বলেন সুরজিৎ। বেশি সময় লাগেনি, তিন লাখ টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন মইন।
সুরজিৎ বললেন, ‘এতদিন পর আবার যোগাযোগ। আমার এক কথায় এতগুলো টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে। সত্যি আমি মুগ্ধ। এবার বাচ্চাটাকে সুস্থ করে তোলার পালা।’
অখ্যাত এক সাঁতারুর শিশু পুত্রের চিকিৎসার জন্য বিখ্যাত এক সাঁতারুর এই উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়।