করোনার কোপে নানা জনের সমস্যা নানা রকম। কম-বেশি আর্থিক সঙ্কট তো প্রায় সব মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত পরিবারেই। এর বাইরেও আছে আরও অনেক সমস্যা। যেমন ধরা যাক ঐশি বিশ্বাসের কথা।
গত বছর রাজ্য অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে অনূর্ধ্ব ১৪ বিভাগে লং জাম্পে সোনা জিতেছিল উত্তর ২৪ পরগনার ঐশি। ১০০ মিটারে রুপো। পরে রাঁচিতে পূর্বাঞ্চল অ্যাথলেটিক্সেও ওই বিভাগে লং জাম্পের সোনার পদক ওর গলায় উঠেছিল। অন্ধ্রপ্রদেশে জুনিয়র ন্যাশনালে পেয়েছিল লং জাম্পে ষষ্ঠ স্থান। তিরুপতিতে সারা ভারত আন্তঃ জেলা অ্যাথলেটিক্সে অনূর্ধ্ব ১৪ বিভাগে লং জাম্পে জিতেছিল রুপো।
এখন বেঙ্গালুরুতে রয়েছে অঞ্জু ববি স্পোর্টস ফাউন্ডেশন। জুনিয়রদের বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা দেখে সেখান থেকে প্রতিভা বাছাই করছেন ভারতের কিংবদন্তি লং জাম্পার অঞ্জু এবং তাঁর স্বামী কোচ রবার্ট ববি জর্জ। গত বছর জুনিয়র ন্যাশনাল ও সারা ভারত আন্তঃ জেলা অ্যাথলেটিক্সে জাম্প দেখে ঐশিকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়। ঠিক হয় ৬ মাস বেঙ্গালুরুতে ট্রায়ালে থাকতে হবে। তারপর নির্বাচিত হলে ফাউন্ডেশনে শিক্ষার্থী হিসেবে সুযোগ পাবে। ফেব্রুয়ারির গোড়ায় বেঙ্গালুরুতে সেই ট্রায়ালে চলে যায় ঐশি। ওখানকার সাই হস্টেলে থেকে অনুশীলন করছিল রবার্ট ববি জর্জের তত্ত্বাবধানে। কিন্তু মাত্র দেড় মাস ওখানে থেকে মার্চে করোনা-লকডাউন শুরু হতেই ওকে ফিরে আসতে হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার কল্যাণগড়ের বাড়িতে।
ঐশির বাবা মিহির বিশ্বাস কল্যাণগড়েই একটি জুয়েলারির দোকানে গহনার ডিজাইনের কাজ করেন। করোনার কোপে অনেকদিন কাজ বন্ধ ছিল। এখন আবার টুকটাক শুরু হলেও আরও অনেক পরিবারের মতোই আর্থিক সমস্যা বেড়েছে। তার মধ্যেই চালিয়ে যাচ্ছে ঐশি অনুশীলন। নিয়মবিধি মেনে এখন আবার যেতে শুরু করেছে ওখানকার সুহৃদ সঙ্ঘের মাঠে বাসুদেব ঘোষের কাছে ট্রেনিং নিতে। কিন্তু অঞ্জু ববি স্পোর্টস ফাউন্ডেশনে আবার ট্রায়ালে যাওয়ার সুযোগ হবে কিনা, জানে না নবম শ্রেণির ছাত্রী ঐশি।