২০১৯ ছিল সাফল্যে ভরা। লখনৌয়ে আন্তঃ রাজ্য অ্যাথলেটিক্সে ট্রিপল জাম্পে ১৩.০১ মিটার লাফিয়ে সোনা। পুনেয় সর্ব ভারতীয় রেল অ্যাথলেটিক্সে সোনা জিতেছিলেন ১৩.১৫ মিটার লাফিয়ে। রাঁচিতে ওপেন ন্যাশনালে সোনার পদক জিততে লাফিয়েছিলেন ১৩.২১ মিটার। নেপালে সাউথ এশিয়ান গেমসে ভারতের হয়ে জিতেছিলেন ব্রোঞ্জ পদক। লাফিয়েছিলেন ১২.৭৭ মিটার। ভৈরবী রায় একটি সফল বছর কাটিয়ে আসার পর ২০২০-র জন্য বেশ কয়েকটি টার্গেট ঠিক করে ফেলেছিলেন। কিন্তু করোনার ধাক্কায় বাংলার এই সফল অ্যাথলিটকে এখন মাঠে নয়, অনুশীলন করতে হচ্ছে সল্টলেকের রাস্তায়!
সল্টলেকের সাই হস্টেলেই থাকেন ভৈরবী। করোনা-লকডাউন শুরু হতেই হস্টেল বন্ধ হয়ে যায়। আরও অনেকের মতো ভৈরবীকেও ছেড়ে দিতে হয় হস্টেল। চলে যান জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির পশ্চিম মল্লিকপাড়ার বাড়িতে। একসময় ওখানেই কোচ রানা রায়ের কাছে শুরু হয়েছিল ভৈরবীর অ্যাথলেটিক্স চর্চা। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে সেখানেই ছিলেন। অফিসের কাজের তাগিদে ২ মাস হল ফিরেছেন কলকাতায়। কিন্তু সাই হস্টেলের দরজা এখনও বন্ধ। ফলে সল্টলেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে আছেন। শুধু হস্টেল নয়, সাইয়ের মাঠে ঢোকাও এখন নিষেধ। কী আর করবেন, সল্টলেকের রাস্তাতেই ফিজিক্যাল ট্রেনিং সেরে নিচ্ছেন। জলপাইগুড়িতে গিয়ে লকডাউনের সময় ঘরবন্দিই ছিলেন। তারপর আনলক পর্বে কিছুটা ফিজিক্যাল ট্রেনিং। ভৈরবী বলছিলেন, ‘এভাবে কী প্র্যাকটিস করা যায়! স্যার (কোচ সুশান্ত রায়) কিছু সিডিউল ঠিক করে দিয়েছেন, অনলাইনে কিছু পরামর্শ দিচ্ছেন, এভাবেই চলছে। জলপাইগুড়িতেও একইভাবে চলেছে। কিন্তু সাই না খোলা পর্যন্ত তো জাম্প প্র্যাকটিস করা সম্ভব নয়।’ সামনের বছরের মার্চ থেকে কম্পিটিশন শুরু হতে পারে। এরকমই শুনেছেন ভৈরবী। বললেন, ‘অ্যাথলিটদের সারা বছর প্র্যাকটিস দরকার। সেখানে মাসের পর মাস এভাবে নষ্ট হচ্ছে! এখনও প্র্যাকটিসের সুযোগ হচ্ছে না। মার্চে কম্পিটিশন শুরু হলেও তার জন্য কিছুটা প্রস্তুতি তো দরকার। কী হবে জানি না! এই সমস্যাটা শুধু আমার একার নয়, আরও অনেকেরই।’
কীভাবে সময় কাটাচ্ছেন এই মুহূর্তে বাংলার অন্যতম সেরা অ্যাথলিট? যখন ধূপগুড়িতে ছিলেন বাড়ির রান্নার কাজে অনেকটা সময় দিয়েছেন। এছাড়া টুকটাক সিনেমা দেখা, গল্পের বই পড়া। কলকাতায় ফেরার পর অবশ্য সময় অনেক কমে গিয়েছে। কারণ অনেকটা সময় চলে যাচ্ছে অফিসে। বললেন, ‘রান্না করতে আমার বেশ ভালই লাগে। অনেকরকম রান্নাই করতে পারি। এমনিতে বাড়িতে খুব কমই থাকা হয়। আগেও বাড়িতে যখন যেতাম রান্না ঘরে অনেকটা সময় দিতাম। এবার টানা অনেকদিন বাড়িতে থাকায় সুযোগটা বেশি পেয়েছি।’