নাচে কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন। অফুরন্ত সময়ে তা ঝালিয়ে নিয়েছেন। কিছুটা উন্নতিও করেছেন। একাগ্রতা বাড়াতে ধ্যান করেছেন। জিমন্যাস্টিক্সের কিছু ভাল ভিডিও দেখেছেন। সবসময়ই ভালবাসেন বিখ্যাত ক্রীড়াবিদদের আত্মজীবনী পড়তে। পড়ে ফেলেছেন কয়েকটা আত্মজীবনী। নতুন-পুরনো মিলিয়ে দেখেছেন কয়েকজন ক্রীড়াবিদের বায়োপিক। যার মধ্যে রয়েছে নাদিয়া কোমানচির বায়োপিকও। যা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। মা-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন রান্নার কাজেও। আর ছিল বি এ ফাইনাল পরীক্ষার প্রস্তুতি। ভারতের পরিচিত জিমন্যাস্ট স্বস্তিকা গাঙ্গুলি এভাবেই কাটিয়ে দিয়েছেন করোনাকালের প্রায় সাত মাস।
৪-৬ মার্চ আগ্রায় ছিল আন্তঃ রেল জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা। ওখান থেকে ফিরে কলকাতার গড়িয়ার বাড়িতে দু’দিন কাটিয়েই চলে গিয়েছিলেন কর্মস্থল চিত্তরঞ্জনে। সি এল ডব্লুর চাকরিসূত্রে ওঁকে এখন থাকতে হয় ওখানকার কোয়ার্টার্সেই। ঠিক ছিল কিছুদিন পর চিত্তরঞ্জন থেকে ফিরবেন কলকাতায়। বি এ (পলিটিক্যাল সায়েন্সে অনার্স) ফাইনাল পরীক্ষা দেবেন। কিন্তু সব গোলমাল পাকিয়ে যায় করোনার জেরে। কলকাতায় আর ফেরা হয়নি। আটকে আছেন সি এল ডব্লুর কোয়ার্টার্সেই। ওখান থেকেই ১-৮ অক্টোবর অনলাইনে দিয়েছেন ফাইনাল পরীক্ষা। করোনা-লকডাউন বা তার পরবর্তী সময়ে খুব বেশি একাকিত্ববোধ করেননি। কারণ ওখানে সঙ্গে আছেন ওঁর মা শুভ্রা গাঙ্গুলি।
একদা জাতীয় শিবিরে যখন ছিলেন বিশ্বেশ্বর নন্দী, মিনারা বেগম, জয়প্রকাশ চক্রবর্তীদের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিন্তু ওঁর জিমন্যাস্টিক্স-জীবনের প্রায় পুরোটাই কেটেছে সোনারপুর জিমন্যাসিয়ামে। ওখান থেকেই উঠে এসেছেন স্বস্তিকা। ওই ক্লাবের সঙ্গে এখনও জড়িয়ে। লকডাউনের সময়ে যখন বের হতে পারছিলেন না, ঘরের মধ্যেই অনলাইনে সোনারপুর জিমন্যাসিয়ামের দুই কোচ সুবীর মৈত্র ও শ্যামলী ঘোষ মৈত্রর পরামর্শ মতো ট্রেনিং করেছেন। আনলক পর্বে অবশ্য সি এল ডব্লুর কোচ সোনালী কুমারের তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করছেন। অফিস, অনুশীলনের বাইরে সময় কাটাচ্ছেন নানাভাবে। বিশেষ করে লকডাউনের সময় যখন অফিস, অনুশীলন কোনওটাই ছিল না।
স্বস্তিকা বলছিলেন, ‘ঘরে আটকে থাকলেও বেশি সমস্যায় পড়িনি। চিত্তরঞ্জনে আমার সঙ্গে মা থাকেন। সব মিলিয়ে সময় কেটে গেছে। তবে প্র্যাকটিসের ক্ষতি তো হয়েছেই। আর কম্পিটিশনে নামার জন্য ছটফট করছি। আবার কবে সব নর্মাল হবে, কবে আবার কম্পিটিশন শুরু হবে, জানি না। এখন ভালভাবে প্র্যাকটিস শুরু আর কম্পিটিশনে নামার অপেক্ষায় আছি।’