লকডাউনের সময় পাতিয়ালায় তিন মাস অনুশীলনের কোনও সুযোগ ছিল না। আনলক পর্ব শুরু হতেই ফিরে এসেছেন রায়গঞ্জের বাড়িতে। সেখানে ফিরেও ১৫ দিন থাকতে হয়েছিল কোয়ারেন্টিনে। তারপরও পুরোপুরি অনুশীলন শুরু করতে পারেননি বাংলা ও ভারতের নামী অ্যাথলিট সোনিয়া বৈশ্য। রায়গঞ্জ থেকে ফোনে সোনিয়া বলছিলেন, ‘কোথায় প্র্যাকটিস করব? আমি তো অনেকদিন ধরেই রায়গঞ্জের বাইরেই প্র্যাকটিস করেছি। প্রথমে শিলিগুড়িতে। আর পরের দিকে অধিকাংশ সময়ই ন্যাশনাল ক্যাম্পে। এখানে প্র্যাকটিস করার মতো অতটা উন্নত পরিকাঠামো নেই। যেটুকু আছে তাও এখন কাজে লাগানো যাচ্ছে না। বৃষ্টিতে মাঠের অবস্থা ভীষণ খারাপ। একসময় তো মাঠে পা ফেলাই যাচ্ছিল না। এখনও ঘাসে ভরা।’ ফলে রাস্তাতেই হালকা অনুশীলন করে নিতে হচ্ছে সোনিয়াকে।
পাতিয়ালা থেকে ওঁরা যখন চলে আসেন, বলে দেওয়া হয়নি আবার কবে ন্যাশনাল ক্যাম্পে যেতে হবে। সোনিয়াও জানেন না, আবার কবে যেতে পারবেন পাতিয়ালায়। লকডাউনের সময় পাতিয়ালায় ছিলেন পুরোপুরি ‘বন্দি’। অনুশীলন তো দূরের ব্যাপার, হস্টেল থেকেই বের হওয়ার সুযোগ ছিল না। সময় কেটেছে হ্যারি পটারে। হিন্দি, ইংরেজি মিলিয়ে কিছু সিনেমা দেখেছেন। রায়গঞ্জে ফেরার পরও ওই সূচির বিশেষ বদল ঘটেনি।
২০১৯-এর জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় শেষ নেমেছেন পোল্যান্ডে। একবছরের বেশি হয়ে গেল প্রতিযোগিতায় নেই। আরও কতদিন এভাবে যাবে, জানেন না সোনিয়া। বললেন, ‘মাসের পর মাস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে! কম্পিটিশন নেই। ঠিক মতো প্র্যাকটিস করা যাচ্ছে না। নিজের ফোকাস কীভাবে ঠিক রাখব?’ ওঁকে চিন্তায় রেখেছে, ন্যাশনাল ক্যাম্পে এখনই আবার ডাকা না হলে কোথায়, কার কাছে করবেন অনুশীলন? জাতীয় পর্যায়ের অ্যাথলিটদের অনুশীলনের জন্য উন্নত পরিকাঠামো বাংলায় শুধুমাত্র কলকাতা ছাড়া অন্যত্র নেই।
সল্টলেকেও এখনও সাই সেন্টার খোলেনি। জাতীয় শিবিরে এখনই আবার ডাক না পেলে, সাই সেন্টার খুললে কি চলে আসবেন কলকাতায়? সেটাও ভাবছেন। ২০১৯ সাল থেকেই ইস্টার্ন রেলের চাকরির জন্য কথাবার্তা চলছে। অনেকটা এগিয়েও তা আটকে আছে। হয়ত করোনার জেরেই। এটাও এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের নামী ৪০০ মিটার রানারের। এরই মাঝে রায়গঞ্জ থেকে একাধিকবার এজন্য কলকাতায়ও আসতে হয়েছে। লাভ কিছু হয়নি। দিনদিন নানারকম চিন্তা (ওঁর ভাষায় মাথাব্যথা) বেড়েই চলেছে। হ্যারি পটারেও যা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না সোনিয়া বৈশ্য।
হ্যারি পটারেও ‘মাথাব্যথা’ কমছে না সোনিয়ার-নির্মলকুমার সাহা

