দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ভোট আসে ভোট যায় প্রতিশ্রুতি সার,বাম আমল থেকে এলাকায় স্থায়ী কংক্রিট ব্রীজের দাবি অধরাইt পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের ভগবন্তপুর ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের চৈতন্যপুরে।ওই এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে শীলাবতী নদী তার উপর ছিল নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো,২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে ১৪ লক্ষ টাকা ব্যায় করে কাঠের পোল তৈরি করে কিন্তু উদ্বোধনের আগেই ২০১৭ সালে বন্যায় জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছিল নতুন কাঠের পোল,বন্যায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যাতায়াত।
২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষে গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে পুনরায় ১২ লক্ষ টাকা ব্যায় করে ওই ভাঙ্গা কাঠের পোল সংস্কার করা হয়।শিলাবতী নদীর একদিকে ভগবন্তপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত অপরদিকে রয়েছে ভগবন্তপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত,এই গ্রাম পঞ্চায়েতের অধিন রয়েছে চৈতন্যপুর,কৃষ্ণপুর ও ধর্মপোতা এলাকায় মোট তিনটি কাঠের পোল যা তৃণমূল ক্ষমতায় এসে ভগবন্তপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত নির্মান করে।ওই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩০-৪০ টি গ্রামের মানুষ তৎসহ পার্শ্ববর্তী হুগলি জেলার সাথে সংযোগ স্থাপন করে চৈতন্যপুর কাঠের পোল এবং কৃষ্ণপুর কাটের পোল দুটি।
স্কুল,কলেজ,হাসপাতাল থেকে চন্দ্রকোনা শহরে জরুরি কাজে যাতায়াতের একমাত্র পথ শিলাবতী নদীর উপর এই পোলগুলি।প্রতিদিন চৈতন্যপুর কাঠের পোলের উপর দিয়ে মারুতি,টোটো,ভ্যান,মোটরসাইকেল,সাইকেল সহ হাজারও মানুষের যাতায়াত এইসব কাঠের পোলের উপর দিয়ে।কৃষ্ণপুর থেকে চৈতন্যপুর হয়ে সোজা পথে চন্দ্রকোনা শহর আসতে ১৪ কিমি পথ অতিক্রম করতে হয়,এই কাঠের পোলের যাতায়াত বিঘ্নিত হলে কৃষ্ণপুর থেকে শ্রীনগর পলাশচাবড়ী হয়ে ঘুর পথে দিগুন রাস্তা তথা ৩০-৪০ কিমি পথ অতিক্রম করে চন্দ্রকোনা শহরে পোঁছতে হয় একাধিক গ্রামের মানুষকে।
বন্যার সময় নদী তীরবর্তী চৈতন্যপুর,পরমানন্দপুর,কল্লাকৃষ্ণপুর,চাষীবাড়,এদিকে কেশাডাল ভগবন্তপুর সহ একাধিক গ্রামের যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যায় শিলাবতী নদীর জল বেড়ে গেলে।ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলাবতী নদী ও কানা নদীর খাল ফলে বাসিন্দাদের নিত্য দিনের যাতায়াত পোল পেরিয়েই।বর্তমানে পঞ্চায়েতের তৈরি চৈতন্যপুর,কৃষ্ণপুর এলাকায় থাকা দুটি কাঠের পোলের অবস্থা নড়বড়ে,পোলের দুপাশের গার্ডওয়াল ভাঙ্গা,তারউপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাতায়াত।বাম আমল থেকেই ওইসব এলাকার মানুষ দাবি জানিয়ে আসছে চৈতন্যপুরে শিলাবতী নদীর উপর কংক্রিট ব্রীজ তৈরির,স্থানীয় প্রশাসন থেকে জেলা এমনকি পরিবর্তনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর কাছেও চিঠি দিয়ে দাবি করা হয়েছিল একটি কংক্রিট ব্রীজ গড়ে তোলার।স্থানীয়দের অভিযোগ,ভোট এলেই একবার করে ব্রীজ হবে হুজুগ তোলা হয় কিন্তু ভোট ফুরালেই সব চাপা পড়ে যায়।মাঝে বেশকয়েকবার রাজ্য পূর্ত দপ্তরের তরফে ব্রীজ সংলগ্ন অ্যাপ্রোচ রাস্তা নির্মানের জন্য মাপজোপ হয় কিন্তু তারপর আর কোনও খবরই নেই ব্রীজ তৈরি সংক্রান্ত।যদিও এবিষয়ে ভগবন্তপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ইকবাল সরকার ও ভগবন্তপুর ১ অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের কনভেনার আরমান আলি খাঁন সমস্যার কথা স্বাীকার করলেও দুজনের দাবি,বাম আমল থেকেই মানুষ ব্রীজের গল্প শুনে এসেছে,তাদের সরকার ক্ষমতায় এসে গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে দুটি কাঠের পোলের ব্যবস্থা করেছে।
আরো পড়ুন:গুরুতর দূর্ঘটনার কবলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই, চিন্তার ভাঁজ তৃণমূল জুড়ে
ব্রীজের কাজের জন্য রাস্তা তৈরির জন্য জমি সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে সেগুলি মিটে গেলেই ব্রীজের কাজ হবে।ভোট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে,এবিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অবগত রয়েছেন।একুশের নির্বাচনে আমরাই ক্ষমতায় আসছি ভোট মিটলেই জমিজট কাটিয়ে দ্রুত ব্রীজের কাজ সম্পন্ন হবে।”বছর খানেক আগে মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে চৈতন্যপুরে কংক্রিট ব্রীজ নির্মানের প্রসঙ্গ তুলতে দেখা গিয়েছিল চন্দ্রকোনা বিধানসভার বিধায়ক ছায়া দোলইকে।তৃণমূল আশাবাদী ভোট মিটলেই রাস্তার কাজ সম্পন্ন করে কংক্রিট ব্রীজের কাজও তারাই করবে।এদিকে ভোট ঘোষণা হয়ে যেতেই বাম আমল থেকে এলাকাবাসীর ব্রীজের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে ভোটে হাতিয়ার করতে চলেছে বিজেপি।বিজেপির চন্দ্রকোনা উত্তর মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত দোলুই বলেন,বামেরা করেনি তৃণমূলও দশ বছরে এলাকাবাসীর দাবিকে আমল দেয়নি,বহু মানুষের যাতায়াতের সমস্যা।ভোটে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমরা মানুষকে আশ্বস্ত করবো কেন্দ্রে তাদের সরকার,একুশে রাজ্যে তারা ক্ষমতায় এসে ডবল ইঞ্চিন সরকার প্রথমেই এই এলাকায় কয়েকটি কংক্রিট ব্রীজের দাবিকে মান্যতা দিয়ে তারা তা পুরন করবে।”আরও একটি নির্বাচন আর আবারও ভোটের মুখে রাজনৈতিক দলগুলির নজরে চৈতন্যপুর,কৃষ্ণপুর এলাকায় শিলাবতী নদীর উপর কংক্রিট ব্রীজ তৈরির প্রতিশ্রুতির বাণী।আরও একবার প্রতিশ্রুতি পুরনের অপেক্ষায় এলাকাবাসী।
রিপোর্টঃ শুভ চক্রবর্তী