দাওয়াইপানির দিনরাত্রি – লিখছেন অভিজিৎ আঢ্য

0
179

“বৃষ্টি  পরে এখানে বারো মাস /এখানে মেঘ গাভীর মতো চরে”। এখানে বারো মাস বৃষ্টি না হলেও মেঘেরা গাভীর মতোই  চরে  – বৈকি। কান পাতলেই পাখিদের কলতান আর চোখ মেললেই  কাঞ্চনজঙ্ঘা । শুধুই সবুজের সমাহার। ওক, ফার, বিচ, পাইন আর দেবদারু। মেঘেদের সাথে পাহাড়ের লুকোচুরি। কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড়ী পথে চলতে চলতে মনে পরে যায় লি হিলারের সেই বিখ্যাত উক্তি “I am never lost in the mountains, it is where I found myself.”  

দিন চারেকের ছুটিতে  শহুরে কোলাহলকে দূরে রেখে পাখি আর পাহাড়ের সাথে গল্প করার এক হ্যামলেট। উত্তরে তাকালেই পশ্চিম সিকিমের নামচির চারধাম আর সমুদ্রোপসে মঠ। পাইনের বন এখানে আকাশ ছুঁয়েছে। নীল আকাশের নিচে শ্বেত শুভ্র কাঞ্চনজঙ্গার সাজানো সংসার । সময় এখানে দাঁড়িয়ে থাকে পাহাড়ি উপত্যকার দিকে দু  চোখ চেয়ে। সূর্যাস্তের পর  দার্জিলিং শহর  যেন পৃথিবীর বুকে নেমে আসা এক মায়াবী ছায়াপথ।

মহানন্দা স্যাংচুয়ারির অন্তর্গত  সিঞ্চেল ফরেস্টে  প্রায় পঞ্চাশ রকম পাখি আর রংবেরঙের প্রজাপতি ও মথ। সর্বদা কানে বাজে ঝিঝি  পোকার  সিম্ফনি। তেন্দুয়া, বার্কিং ডিয়ার  ও রেড পান্ডাও মিলতে পারে। পাখিদের সাথে সব ভুলে হারিয়ে যাওয়ায় কোনো মানা নেই।

নিউ জলপাইগুড়ি থেকে মাত্র ছিয়াত্তর কিলোমিটার, জোড়বাংলোকে বাঁ দিকে রেখে এগিয়ে গেলেই প্রায় একশো পঞ্চাশটির মতো পরিবার নিয়ে দার্জিলিংয়ের একটি নিঃশব্দ জনপদ। নদীর নাম দাওয়াইপানি আর গ্রামের নাম ও দাওয়াইপানি। গ্রাম থেকে একটু নেমে গেলেই  ব্রিটিশ আমলের একটা ছোট্ট ব্রিজ। এক অদ্ভুত নিরবতা সমগ্র গ্রাম জুড়ে। গ্রামের আসে পাশেই রয়েছে গ্লেনবার্ন, লামাহাট্টা, তাকদার মতো বিখ্যাত টি-এস্টেট গুলো। তাকদা অর্কিড গার্ডেনে কয়েকশো অর্কিডের সমাহার। দাওয়াই পানির অনতিদূরে তাগদা,তিনচুলে ও  লামাহাটায় একবেলা কাটিয়ে দেওয়া  যায় অনায়াসে। এখানে প্রকৃতি পট পরিবর্তন করে প্রতি  মুহূর্তে। কখনো  মেঘ তো কখনো বৃষ্টি ,কখনো আলো তো কখনো ছায়া। মায়াবী প্রকৃতি উজাড় করে দিয়েছে নিজেকে।  

ঘরে বসেই চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ রূপ দেখতে দাওয়াইপানীর নব নির্মিত হোমস্টে “আড্ডা হাট ” পর্যটকদের  স্বাগত জানাতে প্রস্তূত। সরদার হাতের মোমো আর ভোলার চাইনিস রসনা তৃপ্ত করবে। আর সকলের প্রিয় ছোটু প্রকাশ ছেত্রী  আয়োজন করবে রাতের ক্যাম্পফায়ার। পাখি দেখাতে আর জঙ্গলের মধ্যে ছবি তুলতে ওর জুড়ি মেলা ভার। দাওয়াইপানির পাহাড়ি পথে ট্রেকিং এর জন্য ছোটুই গাইড হয়ে পথ দেখাবে।

(ভোরের কুয়াশা গায়ে মেখে মেঘেদের দল ও পাখিদের সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘার সঙ্গে পরকীয়া করতে একবার আসতেই হবে দাওয়াইপানির  “আড্ডা হাট” হোমস্টেতে ।দাওয়াইপানির মুশকিল আসান “আড্ডা হাট” হোমস্টে। শুধু মাত্র একটি ফোনেই সব ব্য়বস্থা হয়ে যাবে। বুকিং করে নিতে পারেন  www.addahut.com। ফোন  বা হোয়াটআপ করতে হবে এই নম্বরে  ৯৮৩৬৪৯৯৬৭৮)।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here