দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: শিশুদের মন পরিষ্কার হয় এই প্রবাদ সকলেরই জানা। কিন্তু সেই পরিষ্কার মনে একাকীত্ব থাবা বসালে কি হয়, তা কি জানা আছে? নিউটনের সূত্র অনুযায়ী প্রতিটি গতির বিপরীত গতি বর্তমান ঠিক তেমনি শিশুমনে একাকিত্বের থাবা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। করে তুলতে পারে অপরাধী তেমনি তথ্য উঠে আসছে পুলিশ মহলসূত্রে। বর্তমান সময়ের অপরাধজগতের অন্ধকারে ধীরে ধীরে ভির জমাচ্ছে কৈশোর একদিন এই ভোরে থাকছে জুবিনাইল কোর্ট চত্বর।
কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু চর্চিত হয়েছিল কামলেশ। বয়স খুব বেশি না হলেও এমন কিছু নেশাদ্রব্য ছিলনা যেটা তার অজানা ছিল। আজও কলকাতার অলিগলি ঘুরে দেখলে চোখে পড়ে কমলেশ দের মত কিছু কিশোর-কিশোরীকে যারা অন্ধকার জগতে বাস করছে। শুধু তারা কেন বর্তমান সময়ে সম্ভ্রান্ত পরিবারের শিশুরাও অন্ধকার জগতে প্রবেশ করতে দেখছে পুলিশ মহল। এর পেছনে সব চেয়ে বড় কারন একাকীত্ব। অভি দেশেই আজ অপরাধজগতের চৌকাঠ পেরোচ্ছে শিশু সমাজ।
কিছুদিন আগেই সল্ট লাকে সিটি সেন্টার থেকে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে 12 বছর বয়সি এক নাবালক। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে যা বেরিয়ে আসে তা শুনে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশকর্মীদের। নাবালকটির আসল বাড়ি মালদা জেলায়। মায়ের মৃত্যুর পর বাবার কর্মসূত্রে কলকাতায় চলে আসে তারা। কলকাতার একটি নামকরা স্কুলে ভর্তি করে 12 বছর বয়সী নাবালকটিকে। বাবা বাড়িতে থাকে না তাই ভাল লাগেনা ঘরে থাকতে। কলকাতা ঘুরতে চায় সে, কিন্তু টাকা কোথায়? মোবাইল ফোন পাওয়া যাবে অনেক টাকা। তাই ফোন চুরি করেছিল সে, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানায় নাবালক।
বিধান নগর পুলিশের এক কর্তার কথায় ‘ বেশ কিছু ঘটনা সামনে আসছে যেগুলিতে দেখা যাচ্ছে পরিবারের থেকে আলাদা হওয়ার পরেই অপরাধকে বেঁধে বেছে নিচ্ছেন শিশুরা’। শিশু মনস্তত্ববিদ প্রথমা চৌধুরী দাবি ‘ প্রতিটি অভিবাবকের উচিত সন্তানদের কিছুটা হলেও সময় দেওয়া। আর বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে যাতে তাদের সন্তানদের মধ্যে ছোট থেকে অপরাধপ্রবণতা না তৈরি হয়। স্কুলে মারপিট করা বাড়িতে মারধর করার প্রবণতা দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ সেটা ঠিক করতে হবে’।
ব্যস্তময় জীবনের সন্তানকে সময় দেওয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে অভিভাবকদের কাছে। কলকাতার একটি নামকরা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানায় ‘ আগে বাচ্চাদের কোন ভুল হলে অভিবাবকদের জানালে তারা শাসন করতো, কিন্তু বলে আপনারা দেখে নিন’। এইরকম একজন অভিভাবক দিলীপ চক্রবর্তী, তার কথায় ‘ সত্যি এখন ব্যস্ততার মধ্যে সব সময় ছেলেকে সময় দেওয়া হয় না। তবুও চেষ্টা করি সপ্তাহের শেষ দিনটা পরিবারের সাথে সময় কাটানোর’। তবে এখন দেখার মানুষের ব্যস্ততা সমাজের ভবিষ্যতকে আরো কতটা পেছনে ফেলে দেয়।