The Calcutta mirror desk: দেবী এখানে সিংহ বাহিনী নন। রাজার কাছে স্বপ্নাদেশ দিয়ে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন দেবী। সকলে তাকে বড় দেবী নামেই চেনেন। কোচবিহারের রাজপরিবারে বড় দেবীর মূর্তি অন্যান্য দেবীর তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। দেবীর সঙ্গে থাকেন না লক্ষ্মী সরস্বতী কার্তিক গণেশ। তার সাথে আসেন দুজন সখি তাদের নাম জয়া এবং বিজয়া। শুধু সিংহই নয় দেবীর সঙ্গে থাকেন তার বাহন বাঘ। উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে সবচেয়ে জনপ্রিয় দেবী বড় দেবী। একসময় এই পূজোতে নরবলি দেওয়া হতো তবে এখন সেসব অতীত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জানলে অবাক হবেন এখনো এই দেবীর পুজোতে নর রক্ত দেওয়া হয়। নর রক্ত ছাড়া দেবী কখনোই শান্ত হন না। দশমীর দিন বিসর্জনের সময় দেওয়া হয় সুকর বলি। কোচবিহারের রাজারা এবং রাজ পরিবারের সদস্যরা শুরু করেছিলেন এই পুজোর। কালে কালে এই পুজো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দপ্তরের দেবত্র ট্রাস্টি বোর্ড এই পূজোর দায়িত্ব নিয়েছে। এই পুজো শুরু হয় শ্রাবণ মাসে। ভেসে আসা ময়না কাঠের পুজো করার পর থেকেই বড় দেবীর আরাধনার সূচনা। এরপর ওই কাঠের উপরে তৈরি করা হয় দেবী দুর্গার মূর্তি। প্রতিবছর বড় দেবীর বাড়িতে বসে বিরাট ধুমধাম করে মেলা। লক্ষ লক্ষ মানুষ ছুটে আসেন সেখানে। প্রথম পুষ্পাঞ্জলি দেন কোচবিহারের জেলাশাসক এর পর থেকে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় দেবীর পূজা। তালপাতার পুঁথি দেখে মন্ত্র উচ্চারণ করেন পুরোহিত। সে যেন এক প্রাচীন আঙ্গিক। প্রতিবছর এই পুজোকে কেন্দ্র করে দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ ছুটে আসেন। শুধুমাত্র কোচবিহার নয় উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ ছুটে আসেন দেবীর দর্শন করতে। যুগ যুগ কেটে গেলেও রাজ আমলে শুরু হওয়া এই পুজোয় ভাটা পড়েনি এখনও। মনে করা হয় বড়দেবী এলাকায় সবচেয়ে জাগ্রত। তার কাছে মানত করলে তা নাকি কখনোই ফেলা যায় না।