দুর্গামূর্তি তৈরিতে কেন লাগে নিষিদ্ধপল্লীর মাটি ? জানুন অজানা ইতিহাস

0
6

The Calcutta Mirror Desk :

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্‍সব দুর্গাপুজো শুরু হতে আর হাতে গোনা কয়েক দিন বাকি। পাড়ায় পাড়ায় মণ্ডপ সাজানোর কাজ চলছে জোরকদমে। কুমোরটুলিতেও এখন শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। পুজোর বাজারেও উপচে পড়ছে ভিড়। দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় আমাদের রাজ্যে। পুজোর ক-দিন সবার নজর থাকে মণ্ডপে স্বমহিমায় আসীন দশভূজা দেবী দুর্গার দিকে। কিন্তু জানেন কি, দুর্গা মূর্তি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয়?

দুর্গা পুজো মানেই দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি ও উন্মাদনা। পুজোর বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই যেন জেগে ওঠে কুমোরটুলির সরু গলি। কয়েক মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় পুত্র কন্যা সহ মা দুর্গার মূর্তি তৈরির কাজ। খড়ের গায়ে মাটি লেপে, তার উপর রং করে একটু একটু করে ফুটিয়ে তোলা হয় দেবী দুর্গার মৃন্ময়ী মূর্তি। সমস্ত আচার বিচার মেনে এই মূর্তিগুলিই প্রতিষ্ঠা করা হয় মণ্ডপে মণ্ডপে। হুগলি নদীর পাড়ের নরম কাদা মাটি মূর্তি তৈরির জন্য আদর্শ। কিন্তু এই মাটি শুধু নদীর পাড় থেকে আসে না। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে দেবী দুর্গার মূর্তি তৈরির সময় চারটি জিনিস অপরিহার্য। এই চারটি জিনিস হল – গঙ্গামাটি, গোবর, গোমূত্র ও নিষিদ্ধপল্লীর মাটি।

দুর্গা মূর্তি তৈরিতে কেন লাগে নিষিদ্ধপল্লীর মাটি?

প্রথাগত বিশ্বাস অনুসারে মা দুর্গার মূর্তি তৈরিতে নিষিদ্ধ পল্লী থেকে মাটি নিয়ে আসতে হয়। এই মাটি ছাড়া দুর্গা মূর্তি তৈরি করা সম্ভব নয়। নিষিদ্ধপল্লীতে গিয়ে কোনও যৌনকর্মীর কাছে মাটি ভিক্ষা করতে হয় মূর্তি শিল্পীকে। কোনও যৌনকর্মীর দরজায় দাঁড়িয়ে তাঁর হাত থেকে এই ‘পূণ্যমাটি’ সংগ্রহ করতে হয়। আগেকার দিনে পুরোহিত নিজে এই মাটি সংগ্রহ করতে যেতেন। এখন মূর্তিশিল্পীরাই নিষিদ্ধপল্লী থেকে মাটি আনতে যান।

প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে এই মাটিতে পূণ্যমাটি বলা হয় কারণ, নিষিদ্ধপল্লীতে যাঁরা গমন করেন, তাঁরা তাঁদের যাবতীয় পূণ্য যৌনকর্মীর ঘরের দরজার বাইরে রেখে ভেতরে কামনা বাসনার জগতে প্রবেশ করেন। ফলে ওই মাটি মানুষের সব চারিত্রিক গুণে পুষ্ট হয়ে পূণ্য মাটিতে পরিণত হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here