প্রতিদিন ঘর থেকে বের হলেই চোখে পড়ে সাদা পোশাক পড়ে বা খাকি পোশাক পড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি। আমরা যখন বিপদে পড়ি তখন প্রথমেই মনে আসে যার কথা সে পুলিশ। পুলিশ কথাটি কে ভাগ করে দেখলে দেখা যায় পি= পোলাইট বা বিনয়ী, ও= ওবিডিয়েন্ট বা অনুগত, এল= লয়াল বা বিশ্বস্ত, আই= ইন্টালিজেন্ট বা বুদ্ধিমান, সি= কার্য্স বা সাহসী, এবং সর্বোপরি ই= এফিশিয়েন্ট বা দক্ষ।
দেশের প্রতিটি রাজ্যের প্রতিটি জেলার প্রতিটি অঞ্চলের মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমোতে যান এই ভেবে যে তাদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে পুলিশ বাহিনী। কারা এই পুলিশ বাহিনী? তারা কি রোবট? নাকি তারাও আমাদের মত রক্ত মাংস দিয়ে গড়া একটি মানুষ? মুম্বাই আতংবাদি হামলার কথা মনে আছে? যেখানে আজমল কাসাব এবং তার দল মিলে রক্তবন্যা বইয়ে ছিল মুম্বাইয়ের মাটিতে? বিকাশ ও গ্রেপ্তারের পেছনে ও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে পুলিশের। বিসর্জন দিয়ে জীবিত আজমল কাসাব কে গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন মুম্বাই পুলিশের একজন কনস্টেবল।
পুরুষের এত অবদান আছে জানা সত্ত্বেও আজ আমরা পুলিশের বিরুদ্ধে যেতে বেশি সময় নি না। দোষগুণ বিচার না করেই আজ সর্বত্র একটাই শিরোনাম পুলিশ নিগৃহীত। কেন? পুলিশকে সর্বক্ষণ সঠিক হতে হবে? পুলিশের ভুল হতে পারে না? পুলিশ কান্ত হয় তবুও তারা লড়ে যায় মানুষের সুরক্ষার স্বার্থে। 2018 সালের শেষ দিক থেকে 2019 সালের নির্বাচনকে মাথায় রেখে প্রতিনিয়ত কাজ করে গেছে তারা। বদের 900 নির্বাচন প্রক্রিয়া কাটলেও এখনো শান্তির মুখ দেখে উঠতে পারছেন না পুলিশ বাহিনী। জুন মাস থেকে আগস্ট পর্যন্ত 74 টি বিক্ষোভ-সমাবেশ আয়োজিত হয়েছে শুধুমাত্র সল্টলেক এলাকায়, এবং কলকাতা জুড়ে যদি হিসেব করা যায় তা ছাড়াবে শতাধিক। তার মধ্যে রয়েছে 10 দিনব্যাপী অবস্থান-বিক্ষোভ এবং একটি 316 ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি যেখানে দিনরাত পাহারা দিয়ে গেছেন উর্দিধারী পুলিশরা। আন্দোলনকারীদের সাথে ধ্বস্তাধ্বস্তি এখন জল ভাত। তবে এই সুযোগে হাতসাফাই করতেও ছাড়ে না বিক্ষোভকারীরা এমনটাই দাবি এক পুলিশ কর্তার, তার কথায় ‘সুযোগ পেলেই চালিয়ে দেন তারা আমরা আহত হই কিন্তু তবুও কিছু করি না’।
এত পরিশ্রমের পরেও তারা তাদের বাড়ি না গিয়ে ডিউটি করে মানুষের নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু মানুষ তার প্রতিদান দেয় অন্যভাবে। রাখি পূর্ণিমার দিনে অনেক সময় দেখা যায় পুলিশের হাতে রাখি পড়াচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু সেই বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার হারিয়ে যায় টালিগঞ্জের মত ঘটনায়। যেখান পিছপা হন না সাধারণ মানুষ। সর্বোপরি একজন আইপিএস অফিসারের কথায় আমরা চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় ঈশ্বরের নামে শপথ নিয়েছি নিজের সর্বস্ব দিয়ে মানুষের সেবা করব, কাজ করলেও আমরা তো আর আন্দোলন করতে পারি না’। পুলিশ পারে না আন্দোলন করতে মানুষ হিসেবে তাদের ভালোবাসতে। একটু ভালোবাসা অনেক কিছু বদলে দিতে পারে তাহলে পুলিশের সাথে সম্পর্ক বদলাবে না কেন। চেষ্টা একবার করাই যাক না।