দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে বাঙালি মহোৎসব দুর্গাপুজো। আর দুর্গা পুজো মানেই খাওয়া-দাওয়া শপিং ঘোড়ার প্ল্যানিং। পুজোর গন্ধ আসতেই বাঙালি উঠে পড়ে লাগে শপিংয়ে। রাস্তায় ঘুরে ঘুরে শপিং এর সাথে সাথে শপিং মল থেকে কেনাকাটা করা এখন বাঙালির একটা অভ্যাস। অভ্যাস এর দিনে দিনে পরিবর্তন আনছে অনলাইন শপিং সাইট গুলি। কিন্তু সেই শপিং সাইটেও রয়েছে প্রতারণার ভয়। বিশেষজ্ঞদের মতে অনলাইন শপিং শপ এ সরাসরি প্রতারণা না হলেও ধরনের প্রতারণার ফাঁদে পড়তে পারে গ্রাহকরা। কলকাতা পুলিশের সাইবার বিশেষজ্ঞদের দাবি এধরনের সোশ্যাল অনলাইন শপিং সাইট গুলোতে সরাসরি প্রতারণা হওয়ার চান্স খুবই কম, কিন্তু এদের কেন্দ্র করে এখন গড়ে উঠছে অন্যধরণের প্রতারণা চক্র।
অনলাইন শপিং উইন্ডো খুলে অতি সহজেই দেখা যায় নিজের চাহিদা মত জিনিস। এখান থেকে পছন্দ হলেই সেই অনলাইন সাইটের কাল্পনিক ব্যাগে জমা হয়ে থাকবে আপনার চাহিদাটি। এরপরে যখন ইচ্ছা আপনি ক্রয় করতে পারবেন আপনার পছন্দের জিনিসটি। কিছু ক্ষেত্রে খেতে দিতে হয় আপনার ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের নম্বর যার দ্বারা তখনই টাকা দিয়ে দেওয়া যায় বা চাইলে আপনার দেওয়া ঠিকানায় জিনিসটি যখন পৌঁছে যাবে তখন করতে পারেন পেমেন্ট। ডেলিভারি বয়ের হাতে টাকা দিলেই আপনার কাছে পৌঁছে যাবে রঙিন প্যাকেটে মোড়া জিনিসটি। সাইবার ক্রাইম বিভাগের এক কর্তার কথায় ‘কিছু সময় জিনিসটি খুলে গ্রাহকরা দেখতে পান তিনি যেই জিনিসটি অনলাইনে অর্ডার দিয়েছিলেন সেটি সঠিক নেই অথবা জিনিসটি খারাপ। তখন সেটিকে পরিবর্তনের জন্য আবারও অনলাইন সাইটে যেতে হয় তাদের, সেখানে গিয়ে রিপ্লেসমেন্ট অপশনে গেলেই সুযোগ পাওয়া যায় জিনিসটি পরিবর্তন করার। কিন্তু সেই রিপ্লেসমেন্ট এই হতে পারেন আপনি প্রতারিত এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।
সাইবার ক্রাইম পুলিশ সূত্রে খবর চলতি বছর বেশ কিছু এমন ঘটনা এসেছে যেখানে অনলাইনে কেনা প্রোডাক্ট পরিবর্তনের জন্য অনলাইন সাইটে পাওয়া নম্বরে যোগাযোগ করার পরে পরিবর্তনের সাহায্যকারী একজন ব্যক্তির নাম্বার দেওয়া হয়ে থাকে। এরপর তার সাথে যোগাযোগ করা হলে সে এসে জিনিসটি নিয়ে যায় এবং পরে সঠিক জিনিসটি না আসায় ওই অনলাইন সংস্থার সাথে যোগাযোগ করা হলে অনলাইন সংস্থাটি গ্রাহকদের জানায় আর ফেরত দেওয়া প্রোডাক্ট সংস্থার কাছে পৌঁছায়নি বা তিনি জিনিস ফেরত দেননি তাই আসেনি। এরকম ঘটনায় বেশ কয়েকবারই সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশের জালে ধরা পড়েছে পরিবর্তনে সহায়ক কারি ব্যক্তিটি। পুলিশ মহলের দাবি সংস্থাগুলির প্রদত্ত নম্বর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিবর্তন করে দেয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, এর ফলে একদল প্রতারকের ফাঁদে পড়তে হয় সাধারণ গ্রাহকদের।
সামনে পুজো, পুজোর কেনাকাটা জোরকদমে জমে উঠেছে মানুষের মধ্যে। অফলাইন হোক বা অনলাইন মানুষ এখন ব্যস্ত পুজোয় নিজেকে সাজিয়ে তুলতে। অনলাইনে শপিং করতে গেলে বিপদ এড়াতে মেনে চলতে হবে কয়েকটি টিপস। কলকাতার সাইবার ক্রাইম এক্সপার্টদের দাবি ‘অনলাইনে প্রোডাক্ট কিনলে কোন বিশ্বস্ত সাইট থেকে প্রথমে কেনা উচিত এবং অনলাইন পেমেন্ট অপশন এড়িয়ে যাওয়া উচিত, এছাড়াও বাড়িতে বা আপনার দেওয়া অনুযায়ী ঠিকানায় করা জিনিসটি যে পৌঁছে দিতে যাবে তার সংস্থার দেওয়া পরিচয় পত্র দেখে তার পরেই তার হাতে টাকা দিন এবং আর দেওয়া জিনিসটি আগে খুলে দেখে নিন আপনার পছন্দমত প্রোডাক্টটি এসেছে কিনা।’ অনলাইনে প্রোডাক্ট কিনে সেটি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অনেক সময় বিপদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে গ্রাহকদের, সে ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে আপনার কাছে যে মানুষটি প্রোডাক্টটি ফেরত নিতে আসছে সে সংস্থার কর্মী কিনা। অর্থাৎ যখনই আপনার প্রোডাক্টটি ফেরত নিতে কেউ আসবে তখন তার পরিচয় পত্র টি একবার দেখে নিন এবং তার নাম ফোন নাম্বার প্রয়োজনে লিখে রাখুন। যখন সে আপনার জিনিসটি ফেরত নেবে তখন যদি নতুন জিনিস না দেয় তার পরিবর্তে অনলাইন শপিং সংস্থাটির দ্বারা আপনার জিনিস রশিদ নিন। এই টিপস গুলি মেনে চললেই নির্দ্বিধায় পুজোর শপিং করতে পারেন অনলাইন শপিং সাইট গুলি থেকে বলে মত সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞদের।