দ্য ক্যালকাটা মিরর বুরো :বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে কদিন আগেই জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার লুঙ্গি এনগিডি। এর আগে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ক্রিস গেইল, ড্যারেন স্যামির মতো তারকা ক্রিকেটারেরা। আইপিএলে খেলতে গিয়ে স্যামিকে শুনতে হয়েছে কালু ডাক। একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে উনিভার্স বস ক্রিস গেইলকেও। এবার তেমনই এক তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানালেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন জোরে বোলার মাখায়া এনটিনি।
সম্প্রতি এনতিনি জানিয়েছেন শুধু মাত্র তাঁর গায়ের রঙের জন্যে তাঁকে দিনের পর দিন মানসিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে । গায়ের চামড়া কালো বলে সতীর্থদের নাকি কেউই ডেকে কথা বলতেন না। খাওয়ার সময় ডাকতেন না কেউ। এমনকি খাবার টেবিলে তাঁর পাশেও কেউ নাকি বসতে চাইতেন না। নিজেকে তখন খুব একা মনে হতো এনটিনির।
বর্ণবাদ নিয়ে আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখনই এসব বিষয়ে মুখ খুলে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন এনটিনি। তিনি বলেন, ‘ দলের মধ্যে আমি চিরকালই একা ছিলাম। রাতের খাবারের সময় কেউ আমাকে ডাকত না। সতীর্থরা দল নিয়ে পরিকল্পনা সাাজাত আমারই সামনে, কিন্তু কখনই আমার মতামত চাওয়া হতো না । যখন সকালের প্রাতরাশের জন্য যেতাম, কেউ আমার পাশে বসত না। আমরা একই জার্সি পড়লেও এবং একই দেশের জন্যে মাঠে নামতাম । কিন্তু দলের মধ্যে আমি সর্বদাই একাকিত্বে ভুগতাম।’
তিনি আরও জানান দলের মধ্যে তীব্র বৈষম্যের শিকার হলেও, কাউকে ঘুণাক্ষরে টের পেতে দিতেন না, ‘আমি টিম বাসের ড্রাইভারের হাতে কিট ব্যাগ তুলে দিয়ে আমি দৌড়ে মাঠে যেতাম। আসার সময়ও একই রকম কাজ করতাম। লোকে কখনো বুঝতে চাইতো না কেন আমি এসব করতাম। তাদের কখনো বলিনিও যে কি এড়ানোর চেষ্টা করছি।’
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে 650 উইকেটের মালিক এনতিনির ছেলে থান্ডোকেও শিকার হতে হয়েছে বর্ণবিদ্বেষের। অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট ক্যাম্পে যাওয়াটা প্রায় বন্ধই হয়ে যাচ্ছিল থান্ডোর। সেই কথাও জানিয়েছেন এনটিনি, ‘আমি একাকীত্ব থেকে পালিয়ে থেকেছি। আমি যদি বাসের পেছনের সিটে বসতাম তাহলে বাকিরা গিয়ে বসতো সামনের দিকে। যখন আমরা জিততাম সবাই খুশি থাকত। কিন্তু হেরে গেলেই দোষ পড়ত আমার একার ঘাড়ে। আমার ছেলে থান্ডোকেও একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ওর অনূর্ধ্ব-১৯ ক্যাম্পে যাওয়াটা প্রায় বন্ধই হয়ে যাচ্ছিল।’