নির্মলকুমার সাহা
বেশ কয়েক বছর ধরেই তিনি হায়দরাবাদে থাকেন। খেলাধুলো ওখানকার গোপীচাঁদ ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমিতে। লেখাপড়াও চলছে হায়দরাবাদেই। একটানা দীর্ঘদিন হলদিয়ার বাড়িতে এসে থাকার সুযোগ হয় না। কয়েকদিনের জন্য আসা, আবার দ্রুত ফিরে যাওয়া। করোনার ধাক্কায় ছবিটাই বদলে গিয়েছে। জীবনধারা বদলে গিয়েছে অনেকেরই। ব্যাডমিন্টনে মহিলা সিঙ্গলসে প্রাক্তন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ঋতুপর্ণা দাস প্রায় পাঁচ মাস হলদিয়ার বাড়িতে আটকে আছেন। লকডাউন শুরু হওয়ার আগেই মার্চের প্রথম সপ্তাহে হায়দরাবাদ ছেড়ে চলে এসেছিলেন হলদিয়ায়। আর ফিরতে পারেননি। কবে ফিরতে পারবেন গোপীচাঁদের অ্যাকাডেমিতে, আরও অনেকের মতো ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের প্রথম সারির তারকা ঋতুপর্ণারও তা অজানা।
ঋতুপর্ণার কাছে অজানা আরও অনেক কিছু। কবে ফিরতে পারবেন প্রতিযোগিতায়? এই প্রশ্নেরও উত্তর জানা নেই ঋতুপর্ণার। হলদিয়ার বাড়িতে বসেই অনলাইনে গোপীচাঁদের নির্দেশ মেনে কিছুটা অনুশীলন সেরে ফেলছেন। বললেন, ‘টানা মাসের পর মাস ঘরে বসে থাকলে তো খেলাধুলো আর করা যাবে না। ফিটনেস থাকবে না। কোর্টে নেমে প্র্যাকটিসের উপায় নেই। তাই ঘরে আটকে থেকেও যতটুকু নিজেকে তৈরি রাখা যায়, ফিট থাকা যায়, সেই চেষ্টা করছি। ফিজিক্যাল ট্রেনিং, শ্যাডো প্র্যাকটিস। সকালে একঘণ্টা ভিডিও কলে ক্লাস নিচ্ছেন গোপীস্যার। বিকেলে অ্যাকাডেমির অন্য ট্রেনার।’ এটাই এখন ঋতুপর্ণার খেলাধুলোর সিডিউল।
ঋতুপর্ণা শেষ টুর্নামেন্ট খেলেছেন এবছরের প্রিমিয়ার ব্যাডমিন্টন লিগে (পি বি এল), পুনের হয়ে। ওঁদের দল সেমিফাইনালে উঠেছিল। ৮ ফেব্রুয়ারি সেমিফাইনাল খেলেছিলেন বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে। সামনে দেশে, বিদেশে বেশ কিছু টুর্নামেন্ট ছিল। যার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন হায়দরাবাদেই। কিন্তু দেশে করোনার থাবা এসে পড়তেই হায়দরাবাদের অ্যাকাডেমি ছেড়ে হলদিয়ায় চলে আসেন। বাড়িতে বসে এখন কোর্টে ফেরার জন্য ছটফট করছেন। বললেন, ‘বুঝতে পারছি না, কবে আবার খেলতে নামতে পারব! যা অবস্থা মনে হয়, এবছরটা গেল!’
গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে ঋতুপর্ণা এখন হায়দরাবাদেই এম বি এ পড়ছেন। ব্যাডমিন্টনের মতো লেখাপড়াও চলছে অনলাইনে। এর বাইরে বাড়িতে কীভাবে সময় কাটছে? ঋতুপর্ণা জানালেন, টিভি দেখছেন। মোবাইলে অল্পস্বল্প গেম খেলছেন। যেগুলোর জন্য হায়দরাবাদে বিশেষ সুযোগ পাওয়া যায় না।