ডঃ অনিন্দ্য দাস
এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি কিভাবে এবং এর পরিণতিই বা কি, এটাই আধুনিক বিজ্ঞানের সব থেকে বড়ো জিজ্ঞাসা। যেহেতু আমি অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের লোক নই তাই তথ্যগত কিছু ভুলভ্রান্তি থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে অনধিকার চর্চা করে বুঝেছি আধুনিক বিজ্ঞান নিয়ে যারা উন্নাসিকতা দেখায় তাদের জানা উচিত আমরা যে পদার্থবিজ্ঞানের আলোচনা করি তা মহাবিশ্বের মোট পদার্থের ও শক্তির মাত্র ৫শতাংশ। অর্থাত বাকী ৯৫শতাংশই আমাদের অজ্ঞাত ও অধরা। এই অজ্ঞাত অংশকেই ডার্কম্যাটার ও ডার্কএনার্জি রূপে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও ইউনিভার্স যে ম্যাটার বা পদার্থ দিয়ে তৈরি, মহাবিশ্বের জন্মলগ্নে কিছু বা সমপরিমান অ্যান্টিম্যাটারও(যথা পজিট্রন) তৈরী হয়েছিলো। মজার কথা এই অ্যান্টিম্যাটার ও ম্যাটার সংস্পর্শে আসলে annihilation অর্থাত শূন্যস্থান তৈরী হয় ও শক্তি নির্গত হয়। তবে বিজ্ঞানীরা অ্যান্টিম্যাটার বানাতে সক্ষম হয়েছেন। pet scan এ এর ব্যবহার হয়। সর্বোপরি অনেকের মতে অ্যান্টিম্যাটার স্পেসশিপ ভবিষ্যতে মহাবিশ্ব পরিক্রমার দিশা দেখাতে পারে। তবে ১মিলিগ্রাম অ্যানটিম্যাটার তৈরীর খরচ শুনলে আঁতকে উঠতে হয়, আনুমানিক ১০০বিলিয়ন usd। অ্যান্টিম্যাটার এর প্রথম প্রস্তাবনা করেন ১৯৩২সালে অ্যান্ডারসন ও ১৯৩৬ সালে তিনি নোবেল পুরষ্কার পান। NASA র গবেষনা অনুযায়ী আগামী ৪০ থেকে ৬০ বছরের পর অ্যান্টিম্যাটার ব্যবহার করে তারা রকেট বানাতে সফল হবে। এক্ষেত্রে অ্যান্টিপ্রোটন দিয়ে ইউরেনিয়ামকে আঘাত করে প্রথমে fission ও পরে ফিউসন বিক্রিয়া ঘটানো হয়। উক্ত বিক্রিয়ায় নির্গত শক্তিই রকেটের জ্বালানীর যোগান দেবে।
প্রশ্ন হলো মহাবিশ্ব সৃষ্টির সময় যদি অ্যান্টিম্যাটার ও ম্যাটার সমপরিমানে তৈরী হয়েই থাকে তবে তা গেলো কোথায়! এই রহস্য আধুনিক বিজ্ঞানে এখনও রহস্যাবৃত।