সন্তু ধর
ঘটি হোক বা বাঙাল, ধনি কিনবা কাঙাল, সকলের পাতে কখনো না কখনো কুমড়ো উঠেছে। বিশ্বজনীন এই সবজির কদর রুটির সাথে ভর্তা আর গরম ভাতে ছেচকি। কিন্তু পাঁচমেশালি সবজির এই মহান অংশীদারের যে টক কারি হয়, সে কথা কী জানতেন? আজ জেনে নিন জলদি।
বিদেশে হ্যালোয়েন উত্সবের মূল উপকরন এই কুমড়োর যে পুষ্টিগুন কত তা কিন্তু বলে শেষ করা যাবে না। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, এবং প্রচুর আয়রণে সমৃদ্ধ এই কুমড়ো।
আমাদের বাঙালিদের ঐতিহ্যবাহী রান্নায় কুমড়োর স্থান সর্বাগ্রে। বিশেষ করে ঠাকুরের ভোগের প্রধান উপাচার কুমড়ো ভাজা। চাকা চাকা করে কাটা কুমড়োর নরম ভাজা তর্জনীদিয়ে ভেঙে ঝোলা খিচুড়ীর সাথে খাওয়া জাস্ট জিভে জল এনে দেয়।
গরম ভাতের সাথে বা গরম গরম রুটি, পরটার সাথে আলু –কুমড়োর ঝোল না কুমড়ো ভর্তা অনেক হোলো, এবার এই লকডাউনের একঘেয়েমী কাটাতে ট্রাই করে দেখুন কুমড়োর টক।
দারুণ স্বাদের এই আইটেমটি খুব স্বল্প উপকরণ দিয়েই মাত্র 30 মিনিটের মধ্যে বানিয়ে নেওয়া যায়। রেসিপিতে বাটা মসলা ব্যবহার করা হয় না বলে সময়টা কম লাগে। আসুন জেনে নেওয়া যাক, কুমড়োর টক তৈরির জন্যে কী কী উপকরণ লাগবে।
উপকরণ
মিষ্টি কুমড়ো– 400-500 গ্রাম
পাঁচফোঁড়ন- ১ চা চামচ
হলুদ গুঁড়ো- ১/২ চা চামচ
শুকনো লংকার গুঁড়ো- ১/২ চা চামচ
কালো গোলমরিচের গুঁড়ো- ১/২ চা চামচ
সবুজ ক্যাপসিকাম– ১টি
লাল টমেটো- ১টি
পেঁয়াজ কুচি- ২ চা চামচ
চাট মসলা- ১ চা চামচ
জিরে গুঁড়ো- ১/২ চা চামচ
ধনেপাতা কুচি- ২ টেবিল চামচ
লেবুর রস- সামান্য
সর্ষের তেল- ২ চা চামচ
লবণ- স্বাদ অনুযায়ী
ওপরের উপকরন গুলির সিংহভাগ ই আমাদের ঘরে থাকে। তাই এই রেসিপি ইচ্ছা করলে আপনি পড়তে পড়তেই বানিয়ে ফেল্টে পারেন।
এবার জেনে নেওয়া যাক এর প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমেই মিষ্টি কুমড়োকে ছোট ছোট টুকরো (চৌকো) করে কেটে নিন। সেই সাথে ক্যাপসিকাম (চৌকো) আর টমেটোও (চৌকো) কুঁচি করে রাখুন।
২) এবার গ্যাস ওভেনে ভারীবেসের কড়াই বা ননস্টীক প্যান বসিয়ে তাতে সর্ষের তেল গরম করতে দিন। এই রেসিপিতে সর্ষের তেল ব্যবহার হওয়ায় একটা দারুণ আচার সুলভ টক ফ্লেবার আসবে।
৩) তেল গরম হয়ে এলে তাতে পাঁচফোঁড়ন দিয়ে দিন। এরপর পেঁয়াজ কুঁচি ও টমেটো কুঁচি দিয়ে হালকা করে সাঁতলে নিন।
৪) পেঁয়াজ, টমেটো গুলো কষে এলে এরপর কেটে রাখা মিষ্টি কুমড়ো দিয়ে দিন। এই ফাঁকে গ্যাসের ওভেনের তাপ মাঝারী রেখে হাতা দিয়ে নাড়াচাড়া করে তাতে লবণ, হলুদ গুঁড়ো, শুকনোলংকার গুঁড়ো ও কালো গোলমরিচের গুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে নাড়াচাড়া করতে থাকুন।
৫) সব মশলাগুলো কষে এলে আর সুন্দর গন্ধ ছাড়লে তাতে সামান্য একটু জল দিয়ে আর একটু কষিয়ে নিন। এই পর্যায়ে জিরে গুঁড়ো ও চাট মসলা দিয়ে দিতে হবে। এভাবে সবটুকু 3 মিনিট কষিয়ে নিন।
৬) এবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৭ মিনিটের জন্য রান্না করুন। মনে রাখবেন কুমড়ো খুব নরম সবজি হওয়ায় খুব তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়ে যায়।
৭) ৭ মিনিট পর ক্যাপসিকাম কুঁচি দিয়ে আরও কিছুক্ষণের জন্য দমে রাখুন। মনে রাখবেন রান্নার শেষের দিকে ক্যাপসিকাম যোগ করছি কারণ এতে এর সবুজ রং ও পুষ্টিগুণ সঠিক থাকবে।
৮) মিনিট 4 এক পর ঢাকনা খুলে দেখুন। যদি সব জল টেনে কুমড়োর কারি মাখামাখা হয়ে আসে, তখন ধনেপাতা কুঁচি আর লেবুর রস ছড়িয়ে দিন। ব্যস, কুমড়োর টক তৈরি পরিবেশনের জন্যে।
এটি গরম ভাত কিংবা গরম রুটির সাথে খেতে দারুণ লাগবে। পাঁচ ফোঁড়নের সাথে লেবুর রস এই রেসিপিতে স্বাদের এক ভিন্নমাত্রা যোগ করে। যান চটপট বানিয়ে ফেলুন।