নির্মলকুমার সাহা
(২০২০ অলিম্পিক ইয়ার। এই উপলক্ষে পুরনো দিনের কয়েকজন অলিম্পিয়ানকে নিয়ে লেখা। আজ অলিম্পিকে প্রথম সোনাজয়ী মহিলা চার্লট কুপার।)
মহিলা সিঙ্গলসে পাঁচবারের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন তিনি। ১৮৯৫, ১৮৯৬, ১৮৯৮, ১৯০১ ও ১৯০৮। রানার-আপও পাঁচবার। ১৮৯৭, ১৮৯৯, ১৯০০, ১৯০২ ও ১৯০৪। মহিলা টেনিসের সেই প্রথম যুগে উইম্বলডনে জনপ্রিয় তারকা ছিলেন গ্রেট ব্রিটেনের চার্লট কুপার। আধুনিক অলিম্পিকের ইতিহাসের পাতায়ও আলাদাভাবে লেখা রয়েছে তাঁর নাম। ১৯০০ সালে প্যারিসে মহিলারা প্রথম অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। আর অলিম্পিকে প্রথম সোনাজয়ী মহিলা হলেন চার্লট কুপার। সেবার ১১ জুলাই টেনিসের মহিলা সিঙ্গলসে সোনা জিতে তিনি ওই গৌরব অর্জন করেছিলেন। ফাইনালে ৬-১, ৬-৪ গেমে হারিয়েছিলেন ফ্রান্সের হেলেন প্রিভস্টকে। ওই অলিম্পিকেই পরে আরও একটি সোনা জিতেছিলেন চার্লট কুপার। সেটা মিক্সড ডাবলসে। সঙ্গী ছিলেন গ্রেট ব্রিটেনেরই রেজিনাল্ড দোহেত্রি। ফাইনালে ওঁদের কাছে ৬-৪, ৬-২ গেমে হেরেছিলেন ফ্রান্স/আয়ারল্যান্ডের জুটি হেলেন প্রিভস্ট-হ্যারল্ড মোহেনি।
কুপার অলিম্পিকে সোনা জিতেছিলেন ৩০ বছর বয়সে। তখনও অবিবাহিত। ব্রিটেনের টেনিস মহলে অসম্ভব জনপ্রিয় কুপারকে তখন বলা হত ‘চিরকুমারী’। কিন্তু অলিম্পিকে সোনা জয়ের ৬ মাস পর (১২ জানুয়ারি, ১৯০১) কুপার বিয়ের পর্ব চুকিয়ে ফেলেন। বিয়ে করেন বিশিষ্ট টেনিস সংগঠক ও আইনজীবী আলফ্রেড স্টেরিকে। বয়সে তিনি ছিলেন কুপারের চেয়ে ৭ বছরের ছোট। আলফ্রেড পরে ব্রিটেনের লন টেনিস অ্যাসোসিশনের প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন।
অলিম্পিকে জোড়া সোনা জয়ের বছরে কুপার অবশ্য উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। হয়েছিলেন রানার-আপ। আবার উইম্বলডনে খেতাব জিতেছিলেন বিয়ের পর, ১৯০১ সালে। শেষ উইম্বলডন খেতাব জয় ১৯০৮ সালে। ৩৭ বছর ২৮২ দিন বয়সে। সবচেয়ে বেশি বয়সে উইম্বলডনে মহিলা সিঙ্গলসে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড এখনও ওটাই। তখন তিনি দুই সন্তানের জননী। উইম্বলডনে সিঙ্গলসে শেষ খেলেছেন ৪২ বছর বয়সে, ১৯১৩ সালে।
হকিতেও কুপার ছিলেন দক্ষ। সারের হয়ে দীর্ঘদিন নিয়মিত হকি খেলেছেন।
উইম্বলডনে প্রথম খেতাব জেতার পরের বছরই হারিয়ে ফেলেছিলেন শ্রবণ-ক্ষমতা। তখন তাঁর বয়স ২৬ বছর। বাকি জীবনটা কাটাতে হয়েছে কানের যণ্ত্র ব্যবহার করে।
জন্ম: ২২ সেপ্টেম্বর ১৮৭০।
মৃত্যু: ১০ অক্টোবর ১৯৬৬।
test