কোচিং লাইসেন্স করাতে চান মহামেডান ফুটবল সচিব দীপেন্দু বিশ্বাস

0
117

দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: দীপেন্দু বিশ্বাস ফুটবল সচিবের আসনে বসার পর থেকেই মহামেডান স্পোর্টিংয়ে পরিবর্তনের ছোঁয়া l 249 গোলের মালিক এই প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের হাত ধরেই বর্তমানে হাজার ওয়াটের আলো দীর্ঘদিন ধরে আঁধারে নিমজ্জিত থাকা সাদাকালো তাঁবুতে l দীপেন্দুর নেতৃত্বে ইতিমধ্যেই আগামী মরশুমে দ্বীতিয় ডিভিশন আই লীগের লক্ষে এজে কিংসলে, প্রিয়ন্ত সিংহ, তীর্থঙ্কর সরকার, সত্যম শর্মাদের মতো এক ঝাঁক ফুটবলার সই করিয়ে দল গোছানোর কাজে ভবানীপুর সহ বাকি প্রতিদ্বন্দ্বিদের টেক্কা দিয়েছে মহামেডান l এবার সদস্য সমর্থকদের প্ৰিয় সেই দীপুদাই নিজের মুখে দ্যা ক্যালকাটা মিররকে জানালেন মহামেডান নিয়ে তাঁর আগামীদিনের পরিকল্পনা l

দ্য ক্যালকাটা মিরর: তিন প্রধানে দাপিয়ে খেলা দীপেন্দু বিশ্বাস ক্রীড়া প্রশাসনে আসার জন্যে মহামেডানকেই কেন বেছে নিলো?

দীপেন্দু বিশ্বাস: আমি তিন প্রধানের জার্সি গায়েই নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি l আমি যেমন কেরিয়ার শুরু করি মোহনবাগানে তেমনি শেষ করি মহামেডানে মাঝে ইস্টবেঙ্গলেও খেলেছি বেশ কিছুটা সময় l তবে মহামেডানে খেলার সময় এই ক্লাবের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সমর্থক সবার সাথে একটা আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে l তাই ওনারা যখন ফুটবল সচিবের দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করেন ওনাদের ফেরাতে পারিনি l

দ্য ক্যালকাটা মিরর:একদিকে যেমন আপনি মহামেডানের টেকনিকাল ডাইরেক্টর তথা ফুটবল সচিব তেমনি আবার বসিরহাটের বিধায়কও বটে এতো গুলো গুরু দায়িত্ব নিরলস ভাবে সামলাচ্ছেন এনার্জির রহস্যটা কি ?

দীপেন্দু বিশ্বাস: দেখুন ফুটবল আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ l আজ আমি যা সবই ফুটবলের জন্যে ফুটবল না থাকলে কেউই আমায় চিনতো না তাই ফুটবল মাঠ থেকে দূরে থাকার কথা কল্পনা করাও অসম্ভব l আপনি যদি আমায় ভোর পাঁচটায় মাঠে আসতে বলেন আমি চলে আসবো কিন্তু অন্য কোথাও হয়তো যেতে পারবো না l মাঠে যদি সকালে এক ঘন্টাও কাটাই তাহলেও মন ভালো হয়ে যায় দিনের অন্যান্য কাজের জন্যে বাড়তি রসদ পেয়ে যাই আর মন ভালো থাকলে বাকি সব এমনিতেই সহজ হয়ে যায় এটাই হয়তো আমার এনার্জির রহস্য (হেঁসে) l

দ্য ক্যলকাটা মিরর:ফুটবল সচিব হওয়ার পর থেকেই একের পর এক চমক দিচ্ছেন ফুটবলার সই করিয়ে নতুন কি চমক অপেক্ষা করে আছে?

দীপেন্দু বিশ্বাস: দেখুন চমকের থেকে বেশি আমি ভালো দল গড়ার দিকে মনোযোগ দিতে চাই l ভালো দল গড়লে সাফল্য আসবেই l আমি যেদিন দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলাম মহামেডানকে আইএসলে নিয়ে যাওয়া হলো আমার মূল লক্ষ্য l তবে সেটা রাতরাতি সম্ভব নয় এর জন্যে পরিকল্পনা মাফিক এগোতে হবে l এটা একটা লম্বা ম্যারাথন হতে চলেছে তাঁর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে শক্তিশালী দল গড়ে আই লীগে ওঠাই হলো আমার প্রাথমিক লক্ষ্য l

দ্য ক্যালকাটা মিরর -:কিন্তু স্পনসর বা ইনভেস্টর ছাড়া কি তা সম্ভব?

দীপেন্দু বিশ্বাস: না সম্ভব নয় সেই জন্যেই বলছি এটা ম্যারাথন স্প্রিট নয় l আই লীগে ওঠার পর আমাদের পরবর্তী লক্ষ হবে স্পনসর যোগাড় করা যাতে দল আই লীগে টিকে থাকতে পারে l তবে আমরা শুধু ওখানেই থেমে থাকবো না যেমনটা বললাম আমার মূল লক্ষ্য হলো 2025 এর মধ্যে মহামেডানকে আইএসলে নিয়ে যাওয়া l

দ্য ক্যালকাটা মিরর:মোহনবাগান এবং এটিকের সংযুক্তিকরন নিয়ে কি বলবেন?

দীপেন্দু বিশ্বাস:দেখুন আগেও বলেছি এখনও বলছি আইএসএল খেলতে গেলে আপনাকে ইনভেস্টর আনতেই হবে l তাছাড়া এর আগেও তো মোহনবাগান নামের আগে ম্যাকডয়েলের নাম বসেছে তখন তো কেউ আপত্তি তোলেননি তাহলে এখন কেন? মোহনবাগানের জার্সির রঙ বা লোগো সবই তো অপরিবর্তিত l আসলে মোহনবাগান থাকবে মোহনবাগানেই এর গরিমা কেউ ক্ষুন্ন করতে পারবে না l আগে পরে কার নাম বসলো সেটা এখানে গৌণ l

দ্য ক্যালকাটা মিরর:দেশের জার্সি গায়ে যতটা খেলা উচিত ছিলো ততটা খেলতে পারেননি এই নিয়ে আফসোস হয়?

দীপেন্দু বিশ্বাস:দেখুন এটা ভাগ্যের বেপার এটা নিয়ে এতো বছর পর আফসোস করার জায়গা নেই l 1997 থেকে 2002 পর্যন্ত যতদিন রুস্তম আক্রমভ কোচ ছিলেন ততদিন আমি নিয়মিত জাতীয় দলে খেলেছি l পরবর্তীকালে হয়তো সুখবিন্দর সিংহ বা স্টিফেন কনস্টান্টাইনের হয়তো আমাকে মনে ধরেনি তাই খেলাননি l আসলে প্রতিটা কোচেরই নিজস্ব আলাদা কোচিং পদ্ধতি থাকে আমি হয়তো ওনাদের পদ্ধতির সাথে মানানসই ছিলাম না l তবে এটুকু বলতে পারি জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়ে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা একটা সম্মানের ব্যাপার সে আপনি একটা ম্যাচেই করুন বা 100টা l

দ্য ক্যালকাটা মিরর:ফুটবল থেকে রাজনীতি সারাদিন এতো ব্যাস্ততার মাঝে পরিবারকে সময় দিতে পারেন?

দীপেন্দু বিশ্বাস:(একটু হেঁসে) চেষ্টা করি যতটা সম্ভব সময় দেওয়া যায় তবে বলতে দ্বিধা নেই সেটা খুবই কম l প্রতি বছর 8-10 দিনের একটা ছুটি নিয়ে পরিবারকে নিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরে আসার চেষ্টা করি l আসলে ওরাও বুঝে গেছে ফুটবল ছাড়া আমার চলবে না তাই খুব একটা অভিযোগ করে না l

দ্য ক্যালকাটা মিরর: আপনাকে ভারতীয় ফুটবলের শেষ সফল বাঙালি স্ট্রাইকার বলা হয় আপনার পর সেভাবে বাঙলি স্ট্রাইকার উঠে এলো না কেন?

দীপেন্দু বিশ্বাস: এর একটা বড় কারণ কলকাতা লীগে বিদেশী ফুটবলার দের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া l আগে শুধু বড় দলেই বিদেশী স্ট্রাইকার দেখা যেত কিন্তু এখন সব দলেই বিদেশীর ছড়াছড়ি ফলে বাঙালি স্ট্রাইকারদের সুযোগ পাওয়ার পরিধিও অনেকটাই কমে গেছে l তবে আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় স্ট্রাইকারদের জন্যে একাডেমি করার যে পরিকল্পনা নিয়েছেন তা বাস্তবায়িত হলে আশা করি ছবিটা পাল্টাবে l

দ্যা ক্যালকাটা মিরর: ভবিষ্যতে কি মহামেডানের গন্ডি পেরিয়ে আমরা দীপেন্দু বিশ্বাস কে আইএফএ বা এআইএফএফে প্রশাসক রূপে দেখতে পারি?

দীপেন্দু বিশ্বাস: দেখুন আমি ওতো দূর চিন্তা করি না l আপাতত মহামেডানে যে দায়িত্ব পেয়েছি সেটাতেই মনোনিবেশ করতে চাই, তারপর ঈশ্বর যদি চান সুযোগ আসলে চিন্তা করবো l তবে আমার ইচ্ছে লাইসেন্স করিয়ে কোচিংয়ে আসা l যদিও সময় বার করা খুবই কঠিন তাও চেষ্টা করবো l

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here